এক কোচিং সেন্টারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের হাতাহাতির জের ধরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে শহীদ শামসুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আজ দুপুরে আব্দুল জব্বার মোড়ে শতাধিক শিক্ষার্থী ওই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে বঙ্গবন্ধু হলের রায়হান নামের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বঙ্গবন্ধু হলের প্রথম বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মেসন নামের একটি কৃষি গুচ্ছ কোচিং প্রতিষ্ঠানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঘটনার সূত্রপাত হয়। ময়মনসিংহের টাউন হল মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে প্রায় পাঁচ শ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে উঠলে শামসুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শামসুল হক হলের শিক্ষার্থীরা মঞ্চে উঠলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরাও একই ধরনের স্লোগান দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আয়োজকেরা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে ফেরত পাঠান।

শিক্ষার্থীরা জানান, ওই ঘটনার জেরে রোববার দুপুরে শামসুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।

মেসন কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন, ‘আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের দিনই পরিস্থিতি শান্ত করে দিয়েছিলাম। আজকের সংঘর্ষের সঙ্গে মেসনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একেবারেই ব্যক্তিগত ও হলকেন্দ্রিক ঘটনা।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো.

আবদুল আলীম বলেন, ‘সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমরা ছিলাম, তবে সন্ধ্যার পর চলে আসি। পরে জানতে পারি, রাতে দুই হলের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ দুই হলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মেসনকে অবশ্যই এর দায় নিতে হবে। তদন্ত করে কোচিং প্রতিষ্ঠান ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হল র শ ক ষ র থ র শ খ ম জ ব হল র দ ই হল র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ