সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাতাহাতির দুই দিন পর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হলের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
Published: 9th, February 2025 GMT
এক কোচিং সেন্টারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের হাতাহাতির জের ধরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে শহীদ শামসুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আজ দুপুরে আব্দুল জব্বার মোড়ে শতাধিক শিক্ষার্থী ওই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে বঙ্গবন্ধু হলের রায়হান নামের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধু হলের প্রথম বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মেসন নামের একটি কৃষি গুচ্ছ কোচিং প্রতিষ্ঠানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঘটনার সূত্রপাত হয়। ময়মনসিংহের টাউন হল মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে প্রায় পাঁচ শ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে উঠলে শামসুল হক হলের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে শামসুল হক হলের শিক্ষার্থীরা মঞ্চে উঠলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীরাও একই ধরনের স্লোগান দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে আয়োজকেরা পরিস্থিতি সামাল দিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে ফেরত পাঠান।
শিক্ষার্থীরা জানান, ওই ঘটনার জেরে রোববার দুপুরে শামসুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
মেসন কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন, ‘আমরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের দিনই পরিস্থিতি শান্ত করে দিয়েছিলাম। আজকের সংঘর্ষের সঙ্গে মেসনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একেবারেই ব্যক্তিগত ও হলকেন্দ্রিক ঘটনা।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হল র শ ক ষ র থ র শ খ ম জ ব হল র দ ই হল র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।