বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্রুত কানাডার ভিসা দিতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
Published: 10th, February 2025 GMT
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী আহমেদ হুসেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কানাডার মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা কিছুটা কমিয়েছি, তবে এটি বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে করা হয়নি। বৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু নেই। বাংলাদেশ থেকে যে কোনো বৈধ শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাই।’’
এ সময় বাংলাদেশে কানাডার উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘‘বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’’ দেশকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কানাডাকে তাদের উৎপাদন কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, বৈঠকে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ‘বিদেশি বিনিয়োগ প্রচার ও সুরক্ষা চুক্তি (এফআইপিএ)’ নিয়ে চলমান প্রযুক্তিগত আলোচনার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন কানাডিয়ান মন্ত্রী।
আহমেদ হুসেন বলেন, ‘‘এফআইপিএ স্বাক্ষরিত হলে কানাডার ব্যবসায়ীরা এতে উৎসাহিত হবেন এবং এটি তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।’’
এ সময় কানাডাকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘কানাডার একটি এলাকাকে ‘বেগম পাড়া’ বলা হয়, যেখানে দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের পরিবার বসবাস করছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ এটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।’’
এ প্রসঙ্গে কানাডার মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা দুর্নীতির অর্থ বা লুটপাট করা সরকারি টাকা কানাডায় রাখতে চাই না।’’
বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কানাডার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে কানাডার মন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘আমি জানি, বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের প্রতি তাদের আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছেন।’’
এ সময় বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস