সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গুয়াতেমালায় সেতু থেকে বাস খাদে পড়ে ৫১ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। খবর আল জাজিরার

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র মাইনর রুয়ানো স্থানীয় সময় সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, বাসটির ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আটকে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে ৩৬ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারীর মরদেহ উদ্ধার করে প্রাদেশিক মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বাসটি গুয়েতেমালার রাজধানী থেকে একটি ব্যস্ত সড়ক থেকে যাওয়ার পথে পুয়েন্তে বেলিস নামক স্থানে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেতু পারাপারের সময় বাসটি খাদে পড়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ফায়ার বিভাগের ছবিতে দেখা গেছে, দূষিত খাদে পড়া বাসটি থেকে আহত ও নিহতদের বের করে আনা হচ্ছে। ছবিতে বাসটিকে উল্টে থাকতে দেখা গেছে।

গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বার্নার্দো আরেভালো বাস দুর্ঘটনায় তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। আহত ও নিহতদের উদ্ধারে তিনি সেনাবাহিনী ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে মোতায়েন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি সংহতি জানাই, যারা স্বজনদের মৃত্যুর খবর শুনে জেগে উঠেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কষ্ট আমার কষ্ট।’

গুয়াতেমালার কংগ্রেসের প্রেসিডেন্টও সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনাকে হৃদয়বিদারক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, চার ডজনেরও বেশি গুয়াতেমালাবাসী দৈনন্দিন জীবিকার সন্ধানে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।’

এনজে

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে চলছে ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ

সিলেটে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে এবার ক্রাশার মেশিনের (পাথর ভাঙার কল) বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ছাড়া জেলায় কতগুলো ক্রাশার মেশিন রয়েছে, এর পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজও চলছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ তালিকা জেলা প্রশাসনে জমা দিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জেলায় অন্তত এক হাজার ক্রাশার মেশিন আছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ইউএনওদের সংশ্লিষ্ট উপজেলার ক্রাশার মেশিন কতগুলো আছে, এর তালিকা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ তালিকা ধরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজ চলবে। তবে এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার সকালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গত ৫ আগস্টের পর জাফলং থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর লুটপাট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুই উপদেষ্টা ওই এলাকায় গিয়েছিলেন।

জাফলং পরিদর্শন শেষে দুই উপদেষ্টা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না বলে জানান। অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই প্রশাসন জেলায় কতগুলো বৈধ ও অবৈধ ক্রাশার মেশিন রয়েছে, এর তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে। আগামী বৃহস্পতিবার এ তালিকা তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তালিকা ধরে ধরে সব কটি ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। অবশ্য গতকাল সোমবার থেকে মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে।

গতকাল সিলেট সদর উপজেলা ও জৈন্তাপুর উপজেলায় পাথর ভাঙার ক্রাশার মিলে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেট সদর উপজেলার সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ধোপাগুল এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত টাস্ক ফোর্সের অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মেরিনা দেবনাথ।

অভিযান-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে ৩০টি ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনসিলেটে অবৈধ বালু ও পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত ৪ নৌকা আটক করলেন স্থানীয়রা১৫ জুন ২০২৫

এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার। এ সময় পাঁচটি অবৈধ স্থাপনার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি বালু ধৌতকরণ ও পাথর ভাঙার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয়।
অভিযান-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লক্ষ্মীপুর প্রথম খ এলাকায় একটি ভাইব্রেটর মেশিন (বালু ওয়াশিং), আসামপাড়া এলাকায় আম্মাজান স্টোন ক্রাশার, মুনতাহা স্টোন ক্রাশার, ৪ নম্বর বাংলাবাজার এলাকায় জালালী স্টোন ক্রাশারসহ ৫টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এক ট্রাকচালককে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযান শেষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, পরিবেশবিধ্বংসী কাজে ব্যবহৃত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চলমান থাকবে। কোনোভাবেই আইন অমান্যকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুনসিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পাথর কোয়ারি চালুর দাবি১৪ জুন ২০২৫

এদিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেয় সরকার। এর পর থেকে রাতের আঁধারে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন চলত। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজারো পাথরশ্রমিক প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন শুরু করেন। এসব পাথর বারকি ও স্টিল নৌকায় করে ক্রাশার মেশিনের মালিকদের কাছে বিক্রি করা হয়। পরে সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ওই ব্যবসায়ীরা ট্রাক ও পিকআপে পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ