দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বৈদাশীরহাট নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। আহত কিশোর শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মারধরের শিকার ইয়াসিন আলী (১৫) উপজেলার সংকৈর গ্রামের বটতলী বাজার এলাকার সামিউল ইসলামের ছেলে। তাঁর বাঁ চোখ, নাক ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ইয়াসিনের বাবা সামিউল ইসলাম বলেন, গত রোববার বিকেলে তাঁর ছেলে মাদ্রাসা থেকে একটি সাইকেল নিয়ে বাড়িতে আসে। পরে তিনি সাইকেলটি মাদ্রাসায় পৌঁছে দেন। গতকাল সন্ধ্যায় ইয়াসিন মাদ্রাসায় যায়। তখন শিক্ষক শাহ আলম তাকে বেধড়ক মারধর করেন। ছেলেটার চোখ, মুখ, নাক, কান ফেটে রক্ত পড়েছে; হাত-পায়েও আঘাত করেছে। খবর পেয়ে ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি।

সামিউল ইসলাম আরও বলেন, এভাবে চোরকেও কেউ পেটায় না। ছেলে সুস্থ হলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

চিরিরবন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবরার লাবিব বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর চোখে গুরুতর আঘাত আছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন আছে। তবে চোখের আঘাতটি গুরুতর হওয়ায় আমরা রেফার্ড করেছি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রধান মো.

শাহিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আমার সাইকেল নিয়ে বাড়ি গিয়েছিল। পরে আামি সাইকেল খুঁজতে গিয়ে দেখি, সাইকেল নেই। ভ্যানে করে আমার কাজে চলে গেছি। পরে শুনি, আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষক শাহ আলম ওই ছেলেকে শাসন করেছে। শাসন করতে গিয়ে বেজায়গায় লেগেছে। শিশুটি হাসপাতালে আছে। আমি খোঁজ নিয়েছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ