রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ মঙ্গলবার এ দাবি জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের কাছেও স্মারকলিপির একটি অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পারলাম যে রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়” নাম পরিবর্তন করে “রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়” করার দাবি জানিয়েছে। ২০০৮ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়। বাংলার নারী জাগরণের আলোকবর্তিকা, নারী শিক্ষার অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম রংপুরে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটি রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামে নামকরণ করার মাধ্যমে নারী সমাজের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ও দাবি বাস্তবায়ন হয়।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সমাজের অচলায়তন ভেঙে নারীদের আলোর পথের সন্ধান দিয়েছেন। তিনি সমাজের অবরোধ ভাঙার জন্য, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য, নারীর মুক্তির জন্য আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন, তার ফলে আজ লাখ লাখ নারী শিক্ষা, খেলাধুলা, জ্ঞানচর্চাসহ বিভিন্ন পেশায় এসে সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে পারছেন। সমাজে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার এই স্বপ্নদ্রষ্টার নামে রংপুরে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’–এর নাম পরিবর্তনের জন্য যে দাবি উঠেছে, তার প্রতি নারী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। নাম পরিবর্তনের দাবিটি অযৌক্তিক ও অসম্মানজনক। এই দাবি ওঠায় নারী সমাজ বিস্মিত ও আহত। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি অপরিবর্তিত রাখার জন্য দাবি জানাচ্ছে।

শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতি আরও আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘নারী মুক্তির অগ্রসেনানী মহীয়সী নারীদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব স্থাপনা রয়েছে, যা আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস, সেগুলোর নামও অপরিবর্তিত রাখার বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

আরও পড়ুনবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব গম র ক য় স ম রকল প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ