আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় কমানো হয়েছে। আগে আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ছয় সপ্তাহ সময় পেতেন। এখন তা কমিয়ে তিন সপ্তাহ করা হয়েছে। দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার জন্য এই সময় কমানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩-এর সংশোধনীতে এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই আইনের নাম সংশোধন করে রাখা হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এই আইনে দুবার সংশোধনী আনল। প্রথম সংশোধনী এনে গেজেট প্রকাশ করা হয় গত ২৪ নভেম্বর। গতকাল সোমবার দ্বিতীয় সংশোধনী এনে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

আইনের সর্বশেষ সংশোধনী বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। তিনি বলেন, দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করার জন্য আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় ছয় সপ্তাহ থেকে কমিয়ে তিন সপ্তাহ করা হয়েছে।

এই আইনে আরও বেশ কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। এসব বিষয়েও কথা বলেছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। তিনি বলেন, আগে তল্লাশি ও জব্দ করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তার ট্রাইব্যুনালের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হতো। নতুন সংশোধনীতে এই বিধান উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তকালে প্রয়োজনে যেকোনো কিছু জব্দ ও তল্লাশি করতে পারবেন। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করার জন্য দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতেও পারবেন।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, সর্বশেষ সংশোধনী এনে বিচার চলাকালে আসামির সম্পত্তি যেন জব্দ করে রাখা যায় বা সেটি ট্রাইব্যুনাল তাঁর অধীনে নিতে পারেন, সেই এখতিয়ার ট্রাইব্যুনালকে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আসামিদের বিদেশযাত্রার ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালকে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ