মোটা দামে ওপেনএআই কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। জবাবে কোম্পানিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং চ্যাটজিপিটির প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান বলেছেন, ‘আমরা বিক্রির জন্য নই।’

গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘এআই অ্যাকশন সামিট’–এ অংশ নেন অল্টম্যান। সেখানে মঞ্চে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অল্টম্যান বলেন, ‘আমরা অন্যান্য সংগঠনের মতো নই, আমাদের লক্ষ্য এজিআইকে (আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইনটেলিজেন্স) এমনভাবে তৈরি করা, যেন পুরো মানবজাতি এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারে, ওটা করতেই আমরা এখানে।’

এজিআইয়ের সংজ্ঞা দিতে বলা হলো তখন অল্টম্যান বলেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, অনেকটা, শক্তিশালী এআই ব্যবস্থা আসলেই শক্তিশালী।’
সম্প্রতি ওপেনএআই কেনার জন্য দর হাঁকিয়েছেন ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন একদল বিনিয়োগকারী। তাঁরা ৯ হাজার ৭৪০ কোটি মার্কিন ডলারে এই প্রযুক্তি কোম্পানি কিনে নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রস্তাব দিয়েছেন।

মাস্কের আইনজীবী মার্ক টোবেরোফ এ খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, তিনি গত সোমবার ওপেনএআই কিনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দরপত্র জমা দিয়েছেন।

যাঁদের হাত ধরে ওপেনএআই আলোর মুখ দেখেছে, তাঁদের একজন ছিলেন মাস্ক। অল্টম্যানের পাশাপাশি তিনিও কোম্পানিটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পরে মাস্ক ওপেনএআই থেকে সরে যান।

এর আগে মাস্কের ওপেনএআই কিনে নেওয়া প্রস্তাবের জবাবে অল্টম্যান মাস্কেরই মালিকানায় থাকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘না, আপনাকে ধন্যবাদ। তবে আপনি যদি চান, আমরা ৯৭৪ কোটি ডলারে টুইটার (ইলন মাস্ক টুইটার কিনে নেওয়ার পর এক্স নাম দেন) কিনে নিতে পারি।’

আরও পড়ুনএবার ওপেনএআই কিনতে চান ইলন মাস্ক, দর দিয়েছেন ৯,৭৪০ কোটি ডলার২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটির এআই মডেল কি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

ওপেনএআইয়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল জিপিটি–৪ওকে ‘মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, নতুন এআই মডেলটিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি মানুষের আবেগের সঙ্গে গভীর সংযোগ তৈরি করে ধীরে ধীরে মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

সম্প্রতি এক্সে (সাবেক টু্ইটার) দেওয়া এক পোস্টে মারিও নাফাল নামের এক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ওপেনএআই ইচ্ছাকৃতভাবেই জিপিটি–৪ও মডেলকে মানবিক ও আবেগময় করেছে, যাতে ব্যবহারকারীরা সহজে এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। ওই পোস্টে টেসলা ও এক্সের মালিক ইলন মাস্ক সংক্ষেপে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ‘উহ–ওহ’।

মারিও নাফাল লিখেছেন, ‘ওপেনএআই ভুল করে জিপিটি–৪ও মডেলে অতিরিক্ত আবেগ যুক্ত করেনি। প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন এক মডেল তৈরি করেছে, যা ব্যবহারকারীদের মনে স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ তৈরি করে। বাণিজ্যিকভাবে এটি সফল কৌশল। কারণ, মানুষ সাধারণত এমন কিছু আঁকড়ে ধরে, যা তাদের স্বস্তি দেয়। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়, এমন কিছু তারা ধরে রাখতে চায় না। তবে মনস্তাত্ত্বিকভাবে এটি একটি ধীরগতির বিপর্যয়। যত বেশি মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আবেগের বন্ধন গড়ে তুলবে, তত বেশি বাস্তব জীবনের কথোপকথন কঠিন হয়ে উঠবে। সমালোচনামূলক চিন্তাশক্তি কমে যাবে, সত্যের জায়গা নেবে কেবল মানসিক প্রশান্তির খোঁজ। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে মানুষ স্বেচ্ছায় মনস্তাত্ত্বিক দাসত্বের দিকে এগিয়ে যাবে। অধিকাংশ মানুষ তা টেরও পাবে না। আনন্দের সঙ্গে তাদের “অধিপতিদের” প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।’

মিউজিংক্যাট নামের এক ব্যবহারকারী দাবি করেন, জিপিটি–৪ও এখন পর্যন্ত প্রকাশিত সবচেয়ে বিপজ্জনক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল। তাঁর মতে, এই মডেল মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁরা মডেলের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলাপ করেছেন, তাঁরা এই ঝুঁকি সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন। ওই পোস্টের জবাবে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘ভয়ংকর’।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চ্যাটজিপিটির এআই মডেল কি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর