বুক মার্কেটিং লেখক-প্রকাশক উভয়েরই দায়িত্ব: জসিম উদ্দিন
Published: 12th, February 2025 GMT
সৃজনশীলতার বিস্তার এবং মননশীল পাঠক তৈরিতে দেশের নবীন-প্রবীণ লেখকদের রচনা তুলে ধরতে কথাপ্রকাশ-এর যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সালে। বাংলা সাহিত্যকে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একক উদ্যোগে ‘কথাপ্রকাশ বই উৎসব’ আয়োজন ছাড়াও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃতি লাভ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে দেশের স্বনামধন্য এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী জসিম উদ্দিনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তাপস রায়।
রাইজিংবিডি: দেশের প্রকাশনাশিল্প অনেক দূর এগিয়েছে। কথাপ্রকাশ এই যাত্রার সহযাত্রী। বিশেষ করে প্রবন্ধসাহিত্যে আপনাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা লক্ষ্য করা যায়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।
জসিম উদ্দিন: কথাপ্রকাশ শুরু থেকেই প্রবন্ধের বইয়ের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছে, এটা সত্যি। কারণ, আমরা মনে করি, প্রবন্ধ মানুষের চিন্তা সমৃদ্ধ করে। কথাসাহিত্য বা কবিতাও তা করে, তবে সেগুলো পাঠকের উপলব্ধি যতটা তীব্র করতে পারে, চিন্তা করার সক্ষমতা ততটা হয়তো বাড়াতে পারে না। তাছাড়া প্রবন্ধ সমাজ ও ব্যক্তির মনন জাগিয়ে তুলতে সহায়ক। যে জাতি যত বেশি চিন্তা করতে পারে তারা তত উন্নত। সেই বিবেচনায় আমরা প্রবন্ধসাহিত্যে জোর দিয়েছি।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় একুশে বইমেলা শুরু
বইমেলায় হট্টগোল, উপদেষ্টা ফারুকীর কড়া বার্তা
রাইজিংবিডি: পাণ্ডুলিপি পড়ে বই নির্বাচন। প্রফেশনাল পাবলিশারদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বই প্রকাশ করতে হয়। পাণ্ডুলিপি নির্বাচনে কথাপ্রকাশ কীভাবে কাজ করে?
জসিম উদ্দিন: আমরা পাণ্ডুলিপি পড়েই বই নির্বাচন করি। কখনো নির্দিষ্ট বিষয় চিন্তা করে তারপর সেসব বিষয়ে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের অনুরোধ জানাই। যেমন এ বছর বইমেলায় কথাপ্রকাশ মনোবিশ্লেষণ নিয়ে কয়েকটি বই প্রকাশ করেছে। এই সিরিজে এ বছর ৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া আমরা প্রতিটি পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করি। এ জন্য আমাদের একটি সম্পাদনা পরিষদ আছে। কথাপ্রকাশ মনে করে, কোনো বই ভালো হয়ে উঠবার জন্য সেটি সম্পাদনা করা খুবই জরুরি। নন-ফিকশন তো বটেই, ফিকশনও সম্পাদনা করা দরকার। কথাপ্রকাশের যেকোনো বই দেখলেই সম্পাদনার বিষয়টি বুঝতে পারা যাবে।
রাইজিংবিডি: যে কথাটি খুব বেশি শোনা যায়- ‘পাঠক কমছে’। এখানে রিডিং সোসাইটি গঠনে পাবলিশারদের কী ভূমিকা থাকা উচিত বলে মনে করেন?
জসিম উদ্দিন: পাঠকের সংখ্যা কমছে- এটা অনেকেই বলেন। তবে, আমার মনে হয় বই যদি মানসম্পন্ন হয় তাহলে পাঠক তা গ্রহণ করবেন। সেজন্য সম্পাদনার বিষয়টি থাকা দরকার। পাঠক তৈরি করাও দরকার। এই দায়িত্ব যেমন লেখকের, তেমনি সম্পাদকের এবং প্রকাশকেরও। কোন ধরনের পাঠকের জন্য একটি বই লেখা হচ্ছে সেটা যেমন লেখককে ভাবতে হবে, তেমনি সম্পাদনার ক্ষেত্রে দেখতে হবে বইয়ের বিষয় অনুসারে পাঠকের চাহিদা পূরণ হচ্ছে কি না। যেমন শিশুদের বইয়ের ভাষা নিশ্চয় বড়োদের বইয়ের ভাষার মতো হবে না। একইভাবে বিষয় অনুসারে ভাষা, ইলাস্ট্রেশন, প্রচ্ছদ, এমনকি বইয়ের লেআউট বিবেচনায় নিতে হবে। বইয়ের সঙ্গে যেন পাঠকের আনন্দ যুক্ত করা যায়, সেটা ভাবা দরকার। সেক্ষেত্রে প্রকাশকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, প্রকাশকই তো বইটা পাঠের উপযোগী করে উপস্থাপন করেন।
রাইজিংবিডি: বুক মার্কেটিং মূলত পাবলিশারের কাজ। এখানে লেখক কীভাবে সহযোগিতা করতে পারেন?
জসিম উদ্দিন: এখন তো ফেসবুকসহ অনেক রকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জয়জয়কার। প্রযুক্তি অনেক কিছু সহজ করে দিয়েছে। বইয়ের মার্কেটিং অফ লাইনের চাইতে অনলাইনে এখন অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রকাশকরা সেসব করে থাকেন। এখানে লেখকও অংশগ্রহণ করতে পারেন। নিজের বইয়ের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা, বন্ধু, শুভানুধ্যায়ীদের সেসব পোস্ট ট্যাগ করার মধ্য দিয়ে সহজেই কাজটি করা যায়।
বাংলাদেশের অনেক লেখক এ বিষয়ে অগ্রসর। আবার অনেকেই মনে করেন, বুক মার্কেটিং তাঁর দায়িত্ব নয়। আমরা মনে করি, এটা লেখক-প্রকাশক উভয়েরই দায়িত্ব। কারণ হলো, একজন লেখকের হয়তো এক-দুইটা বা তিন-চারটা বই একই সময়ে প্রকাশিত হয়। কিন্তু একজন প্রকাশককে একই সঙ্গে অনেক বই প্রকাশ করতে হয়। সেগুলো প্রচারসহ নানা কাজ থাকে প্রকাশকের। তাছাড়া প্রতিটি বই প্রকাশকের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সব বইই প্রকাশককে সমানভাবে প্রচার করতে হয়। সেক্ষেত্রে লেখক যদি নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন প্রচার করেন, তাহলে আরও ব্যাপক পাঠকের কাছে সংবাদটা পৌঁছে দেওয়া যায়।
রাইজিংবিডি: একটি ভালো বই অনেক সময় ‘টার্গেট অডিয়েন্সের’ কাছে পৌঁছতে পারে না। বইমেলার ভিড়ে ভালো বই হারিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য কী করা উচিত?
জসিম উদ্দিন: ভালো বই পাঠক ঠিকই খুঁজে বের করেন বলে আমার মনে হয়। তবে প্রচার করাও খুব দরকার। ‘টার্গেট অডিয়েন্সের’ কাছে পৌঁছে দেবার জন্য বোঝা দরকার কোন বই কোন ধরনের পাঠকের জন্য প্রকাশিত হয়েছে। যিনি ফিকশনের পাঠক, তাকে নন-ফিকশন বইয়ের তালিকা পাঠালে টার্গেট অডিয়েন্স পাওয়া যাবে না। সেজন্য বইয়ের বিষয়টা প্রকাশককে আগে বুঝতে হবে। অনেক সময় প্রকাশকদেরও এই বোঝাপড়ার জায়গায় ঘাটতি থেকে যায়। সেটা দূর করা দরকার।
রাইজিংবিডি: কথাপ্রকাশ ‘শৈশবপ্রকাশ’ থেকে শিশুকিশোরদের উপযোগী বই প্রকাশ করছে। কিন্তু এ ধরনের বই প্রকাশ বরাবরই এক্সপেনসিভ। আপনি আলাদা করে শৈশবপ্রকাশের উদ্যোগ নিলেন কেন?
জসিম উদ্দিন: আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ- এই কথাটি আমরা সবাই জানি। আমরা এটা বিশ্বাস করি, ধারণ করি। সেজন্য শিশুদের বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। শিশুদের হাতে তাদের পছন্দের বই তুলে দিতে পারলে তারা মূল্যবোধ শিখবে, চিন্তা করতে পারার সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিশ্বজুড়ে শিশুদেরই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় এই কারণে যে, তারাই তো একসময় রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে মানুষের কল্যাণের জন্য সবকিছু করবে।
শিশুদের বই যেহেতু আকর্ষণীয় হতে হয়, রঙিন ছবি তারা পছন্দ করে, ফলে সেগুলো এক্সপেনসিভ। কিন্তু শিশুদের বই প্রকাশ করাটাকে আমি কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করিনি। শিশুরা ভালো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে এটাই আমার চাওয়া। সে কারণে শৈশবের বইয়ের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম। তবে শৈশবপ্রকাশ অর্থনৈতিকভাবে সফল না হলেও বইগুলো শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হলে আমার শ্রম সার্থক হবে বলে মনে করি।
রাইজিংবিডি: সাহিত্যে নতুন আরও কী ধরনের লেখা আসা উচিত বলে মনে করছেন?
জসিম উদ্দিন: কথাপ্রকাশ যেহেতু প্রবন্ধসাহিত্যের প্রতি বেশি জোর দেয়, সেখানে নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হতে পারে, যেগুলো পাঠকের চিন্তা উসকে দিতে পারবে। যেমন সারা বিশ্বে সাম্প্রতিক কী কী বিজ্ঞানের চর্চা হচ্ছে, দর্শন, ইতিহাস, প্রযুক্তির বিকাশ, শিল্পকলা, সংস্কৃতি ইত্যাদির নতুন নতুন দিক নিয়ে বই হতে পারে। নন-ফিকশনের ক্ষেত্রেও একই কথা। নতুন ধরনের কথাসাহিত্য রচিত হওয়া দরকার। কেবল বাংলাদেশের সাহিত্যের অনুকরণ নয়, বিশ্বসাহিত্যের নতুন কী পরিবর্তন ঘটছে সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সেজন্য নন-ফিকশন ও ফিকশনের গুরুত্বপূর্ণ বই অনুবাদ করা প্রয়োজন।
রাইজিংবিডি: অনেকেই বলেন, প্রকাশনা এখন লাভজনক নয়, অথচ প্রতি বইমেলায় আমরা দেখি প্রকাশক বাড়ছে- এটা কেন হচ্ছে বলে মনে করেন?
জসিম উদ্দিন: প্রকাশনা একটা শিল্প। বাণিজ্যও বটে। এটা অস্বীকার করা যায় না। কেননা, প্রকাশককেও তো খেয়ে-পরে বাঁচতে হয়। তবে এটাও ঠিক যে, বই প্রকাশ করে আমাদের মতো দরিদ্র দেশে টিকে থাকা খুবই কঠিন। যারা প্রকাশক হচ্ছেন তাদের সবারই হয়তো বইয়ের প্রতি একটা গোপন ভালোবাসা আছে। তা না হলে তারা কাপড়ের ব্যবসা করতে পারতেন, রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করতে পারতেন। তা না করে বই প্রকাশ করছেন। এতে বোঝা যায় বইয়ের প্রতি গোপন প্রেম না থাকলে সেটা সম্ভব নয়।
তারা//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল বই শ শ দ র বই র বইয় র ন ফ কশন প রবন ধ র জন য স জন য ধরন র দরক র বইম ল
এছাড়াও পড়ুন:
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
বছর পাঁচেক আগেও ধান কাটার শ্রমিকেরা বৈশাখ মাসের অপেক্ষায় থাকতেন। বৈশাখে হাওরের বুকজুড়ে সবুজ ধান যখন সোনালি রঙ ছড়াতে শুরু করে, তখন থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাওরে আসতে থাকেন ধান কাটার শ্রমিকেরা। কিন্তু, এই চিত্র দ্রুত বদলাচ্ছে। হাওরের কৃষক এখন ধান কাটার জন্য বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করেন। ফলে কৃষকের শ্রম এবং অর্থ দুটোরই সাশ্রয় হচ্ছে। তবে, কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কৃষি শ্রমিকেরা। বাধ্য হয়ে তারা পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে ঝুঁকছেন অন্য পেশায়।
তিন বছর হলো ধান কাটার পেশা ছেড়েছেন মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের মো. মকবুল মিয়া। এখন তিনি সারাবছর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান।
আরো পড়ুন:
খুলনার বরফশ্রমিক
নেই নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও ছুটি
ফুড ডেলিভারিম্যান: খাবারের রাজ্যে অতৃপ্ত দিনরাত
মকবুল মিয়া বলেন, ‘‘আগে বছরের ছয় মাস বর্ষায় নৌকা বাইতাম, আর হুগনা সিজন আইলে নিজের জমি চাষ করতাম, আবার মাইনষের জমিতেও কামলা দিতাম। যা আয় অইতো তাই দিয়া আমরার ছয়জনের সংসার চইল্যা যাইতো। কিন্তু, যহন থেইক্যা নতুন নতুন মেশিন হাওরে আইতাছে, তহন থেইক্যা আমরার আর বেইল নাই।’’
‘‘কেউ আর আমরারে আগের মতন দাম দেয় না। কাম করলেও ঠিকমতো টেহা পাই না, তাই পুষায় না,’’ বলেন এই কৃষিশ্রমিক।
মকবুলের মতো ধান কাটা, মাড়াই, রোদে শুকানো, ঝাড়া, কাঁধে বহন করার মতো স্বাধীন পেশা ছেড়েছেন অষ্টগ্রামের ফয়জুল, ইটনার শামছুল মিয়া, নিকলীর ফরিদ উদ্দিনসহ অসংখ্য শ্রমিক। এক সময় যারা এ পেশায় দলবেঁধে কাজ করতেন, এখন দৃশ্যপট পুরোটাই ভিন্ন। ধান কাটার পেশা বদলে তারা এখন কেউ রিকশাচালক, কেউ চায়ের দোকানদার, কেউ চটপটি-ফুচকার দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তারা বলছেন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির গতির সঙ্গে তারা কখনো তাল মেলাতে পারবেন না। কৃষকরাও তাদের শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন করতে পারছেন না। বেশি জমি যাদের আছে তারাও আধুনিক পদ্ধতির প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। যে কৃষক অল্প জমিতে চাষাবাদ করেছেন, তারাও আর পয়সা খরচ করে কৃষিশ্রমিকের ওপর নির্ভর করছেন না। তারা পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা নিচ্ছেন। ফলে খেটে খাওয়া শ্রমিকেরা পড়েছেন বিপাকে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমির ধান কাটতে প্রচুর সময় লাগে। ফসল কাটার পরে বহন ও মারাই করা, তারপর বস্তায় সংরক্ষণ করার জন্যও অনেক শ্রমিকের দরকার। এটুকু ৬ থেকে ৭ জন শ্রমিকের সারা দিনের কাজ। তার জন্য মজুরি গুনতে হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। কিন্তু, এ কাজে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করলে সময় এবং অর্থ দুটোই কম লাগে।
বৈশাখে বর্ষার পানি ও বৈরী আবহাওয়া না থাকায় কৃষকেরা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে ঝড়-তুফান শুরু হলে পাকা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে তারা যে পদ্ধতিতে ধান কাটা সহজ এবং দ্রুত হয় সেই পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার পুরো জেলায় এক লাখ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওর এলাকাতেই আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হওয়ায় এই ধান থেকে এবার প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ধান কাটতে এ বছর হাওর অঞ্চলে ৩৫ হাজার শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। এই সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় কম। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধান কাটতে কৃষক কম্বাইন্ড হারভেস্টারসহ ৪১৩টি ধান কাটার যন্ত্র ব্যবহার করছেন।
জেলা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ উদ্দিন বলেন, ‘‘মানুষের পেশা পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের বিভিন্ন পেশা বেছে নিতে হয়। কিন্তু, কৃষি এমন একটা পেশা, যারা এ পেশা রপ্ত করেছেন তাদের জন্য নতুন পেশায় আসা খুব কঠিন। বর্তমানে কৃষিকাজে যেভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, তাতে কৃষিশ্রমিকেরা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।’’
‘‘শুধু কৃষিতেই নয়, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রেই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে,’’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকারকেই সুদৃষ্টি দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান, মাঠে যদি কৃষক ও শ্রমিক ন্যায্য শ্রমমূল্য না পান, তাহলে কৃষিও একদিন হুমকির মুখে পড়বে।’’
ঢাকা/তারা