বাতিল হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতের ৩৮ উন্নয়ন কর্মসূচি
Published: 13th, February 2025 GMT
রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা, পুষ্টি কার্যক্রমসহ স্বাস্থ্যের ৩৮টি বড় উন্নয়ন কর্মসূচি সচলে বিকল্প ভাবছে সরকার। এক ছাতার নিচে সবক’টি কীভাবে কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠক ডেকেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে অংশীজনের মতামত নেওয়া হবে। এরপর চলতি মাসেই সরকার নতুন কর্মকৌশল প্রণয়ন করবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় কৌশলগত পরিকল্পনার (ওপি) মাধ্যমে। পাঁচ বছর মেয়াদি সেক্টর কর্মসূচি প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন অনেকে। ১৯৯৮ সালে প্রথম সেক্টর কর্মসূচি শুরু হয়। বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগের আওতায় মোট ৩৮টি সেক্টর কর্মসূচি রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর জুনে শেষ হয়েছে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’। জুলাইয়ে ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকার পঞ্চম এইচপিএনএসপি শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অনুমোদন মেলেনি। এতে স্বাস্থ্যের সব উন্নয়ন ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে ভাটা পড়েছে। তবে সরকার চলমান কর্মসূচি দুই বছরের মধ্যে শেষ করে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় খরচে সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় একই কর্মসূচি চালানোর পরিকল্পনা করছে। এ জন্য নতুন পরিকল্পনার সফট ও হার্ডকপি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিরিন আকতারের সই করা এক চিঠিতে সেক্টর কর্মসূচির বিকল্প পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পনা কমিশন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা আছে, পঞ্চমটিকে সর্বশেষ সেক্টর কর্মসূচি ধরে একটি এক্সিট প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ জন্য একটি কমিটি করেছি, তারা কাজ করছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা.                
      
				
জনস্বাস্থ্যবিদদের সংগঠন পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, নতুন কোনো কর্মসূচি নিতে হলে অন্তত দুই বছর আগে কার্যক্রম শুরু করতে হয়। সরকার চলমান ওপি বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি নতুন কর্মকৌশল নিয়ে বিস্তর আলোচনা করতে পারে। সবার সম্মতি নিয়ে নতুন কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরো ওপি থেকে বের হতে হবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য সেক্টর কর্মসূচি নির্ধারণ করতে হবে। ইন্টিগ্রেটর হেলথকেয়ার ডেলিভারি সিস্টেমের আওতায় এক ছাতার নিচেই হবে সবকিছু।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’