রজতজয়ন্তীর উৎসবে মেতে উঠেছে রাবির ফোকলোর বিভাগ
Published: 13th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ফোকলোর বিভাগের দুই দিনব্যাপী রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী উৎসবে মেতে উঠেছেন বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক ফোকলোর সেমিনারের আয়োজন করেছে বিভাগটি।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ উদ্দীন খান, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা ও বিভাগের শিক্ষক ড. আমীরুল ইসলাম কনকসহ ফোকলোর বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব
পরে ফোকলোর বিভাগের অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই জায়গায় এসে শেষ হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “ফোকলোরের বিষয়বস্তু আমাদের জীবনের সকল জায়গায় জড়িয়ে আছে। যা আমরা অনেক সময় উপলব্ধি করতে পারিনা। প্রত্যেকটা পর্যায়ে বা অধ্যায়ে আমাদের ফোকলোরের প্রয়োজন রয়েছে। একজন মানুষের জীবনধারাকে তুলে ধরে ফোকলোর। টাকা কিন্তু একটি কাগজ মাত্র, কিন্তু সেই কাগজটির বিনিময়ে আমরা পণ্য পাচ্ছি। এই কাগজের পিছনেও একটি গল্প লুকিয়ে আছে যা নিয়ে কাজ করে ফোকলোর। এ বিভাগ থেকে পড়াশোনা করে অনেক কিছু করা যায় এবং অনেকেই ভালো জায়গায়ও আছেন।”
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর বিভাগ ২৫ বছর পদার্পণ করায় রজতজয়ন্তী উৎসব পালন করছে। এতে প্রায় সাড়ে সাত শতাধিক সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। নাচ-গান ও বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে বাঙালির সংস্কৃতিকে ধারণ করার চেষ্টা করছে শিক্ষার্থীরা। বাঙালির শিকড় সন্ধানে ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হওয়া এই বিভাগটি আজ ২৫ বছরে পদার্পণ করেছে। আমাদের যে আত্মপরিচয় ও বাঙালির সঠিক পরিচয়ের ইতিহাস একমাত্র ফোকলোরের মাধ্যমেই অনুসন্ধান করা সম্ভব।”
ঢাকা/ফাহিম/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ কল র ব ভ গ উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় এবার ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা, বেড়েছে ২২টি মন্ডপ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার মন্ডপগুলোতে চলছে নানা প্রস্ততি। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকেরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় বেড়েছে ২২টি পূজা মন্ডপ। সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। জেলায় ২৫০টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আবার কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আপন মনে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। এখন শেষ সময়ের পূজার প্রস্ততি নিচ্ছেন আয়োজকেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মালম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা ৫টি থেকে ১০টি পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করেছেন।
প্রতিমা শিল্পী কুমারেশ দাস ও মৃত্যুঞ্জয় কুমার পাল জানান, শেষ সময়ে প্রতিমা শিল্পীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে চাহিদাও বেশি।
এদিকে সকলের সহযোগিতায় অনাড়ম্বরভাবে দুর্গোৎসব পালন করতে চান আয়োজকরা।
হরিবাসর সার্বজনীন পূজা মন্দিরের উপদেষ্টা বিপ্রজিৎ বিশ্বাস বলেন, “আশা করছি প্রতিবছরের মতো এবছরও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা ও আশ্বাসে আমরা আমাদের পূজার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছি।”
মিলপাড়া সাবর্জনীন পূজা মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী বাগচী বলেন, “প্রত্যেক ধর্মকে সন্মান জানানো প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার সকলেই আমাদের পাশে থাকেন। আশাকরি এবারও তার ব্যত্যয় হবে না।”
কুষ্টিয়া মহাশ্মশান মন্দিরের পুরোহিত পলাশ চক্রবর্ত্তী বলেন, “আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী এবং ২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভূজার আগমন হবে হাতিতে চড়ে আর কৈলাশে ফিরবেন দোলায়।”
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ২৫০ মন্দিরে শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৮১টি, খোকসা উপজেলায় ৫৯টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৯টি, মিরপুর উপজেলায় ২৮টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১১টি ও দৌলতপুর উপজেলায় ১২টি মন্ডবে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ বছর গত বছরের তুলনায় ২২টি মন্ডপে পূজা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর ২২টি পূজা বেশি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এছাড়া ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপের তালিকা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।”
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “প্রতিটা পূজা মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পূজা মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হবে।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন জানান, যার যার ধর্মীয় উৎসব স্বাধীনভাবে ও উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা তাদের অধিকার। কোন প্রোপাগান্ডা ও গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বর্তমান সরকারের মবের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। মব সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কাঞ্চন/এস