নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) বিশ্বশান্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের আয়োজন করে। গত মঙ্গলবার এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারের শুরুতে সিপিএসের পরিচালক এম জসিম উদ্দিন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম বিশ্ব জনমত গঠন করে। ন্যায়বিচার এবং মানবিক সহায়তা অর্জনের জন্য গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং জাতির মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য পিস স্টাডিজের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতিসংঘে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত তোশিয়া হোশিনো। তিনি আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং সংঘাত সমাধানে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

ওয়েবিনারে মূল বক্তা ছিলেন ওসাকা স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক পলিসির অধ্যাপক ভার্জিল হকিন্স। তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে চিন্তাশীল আলোচনা করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সমাধান তৈরিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বিভিন্ন জাতির মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকটের মতো জরুরি ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে। রোহিঙ্গা সংকটের প্রাথমিক পর্যায়ে বহির্বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলো তুলনামূলকভাবে প্রচুর পরিমাণে কভারেজ পেয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, সংঘাত অব্যাহত থাকায় এবং শরণার্থীরা কয়েক বছর ধরে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে না পারায় এই কভারেজ হ্রাস পেতে শুরু করে। ভার্জিল হকিন্স বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কোনো ধরনের সমাধান না হওয়ায় বা পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় মিডিয়া তার আগ্রহ হারিয়েছে।

ওয়েবিনারে সমাপনী বক্তব্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের উচিত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি করতে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহয গ ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ