ভালোবাসা দিবসে বেড়াতে গিয়ে যমুনায় পড়ে নিখোঁজ চার শিক্ষার্থীর তিনজনকে উদ্ধার
Published: 14th, February 2025 GMT
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে যমুনা নদীর স্পারে ঘুরতে এসে মুঠোফোনে সেলফি তোলার সময় অসাবধানবশত নদীতে পড়ে কলেজপড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীসহ চার বন্ধু নিখোঁজ হয়। পরে ধুনট ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ডুবুরিরা তল্লাশি চালিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। তবে জুনায়েদ রহমান (১৮) নামে এক কলেজছাত্র এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর বানিয়াজান স্পার (বাঁধ) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসে তারা যমুনা নদীর স্পারে সেলফি তোলার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
নিখোঁজ কলেজছাত্র জুনায়েদ বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আরডিএ) উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শেরপুর উপজেলা সদরের টাউন কলোনি এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিখোঁজের পর উদ্ধার হওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার আবুল কালাম আজাদ ছেলে ও শেরপুর আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাফিজ ইকবাল (১৮), শেরপুর টাউন কলোনি এলাকার গোলাম সরোয়ারের ছেলে ও আরডিএ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী শোয়েব আহম্মেদ (১৮) এবং সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা উপজেলার হারচি গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে ও রাজধানীর মিরপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মো.
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে চার শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি মেয়ের সঙ্গে যমুনার স্পার বানিয়াজানে দেখা করতে আসে। এর মধ্যে একজনের প্রেমিকা ওই মেয়ে। আজ বিকেল চারটার দিকে বানিয়াজান স্পার এলাকায় প্রেমিকাকে রেখে চার বন্ধু যমুনা নদীর তীরে মুঠোফোনে সেলফি তোলার প্রতিযোগিতায় নামে। একপর্যায়ে চারজন একসঙ্গে যমুনা নদীতে পড়ে ডুবে যায়। এ সময় সেখানকার স্থানীয় লোকজন তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন। তবে একজনকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ব্যর্থ হন।
ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুর মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, যমুনা নদীর তীরে চার বন্ধু সেলফি তোলার সময় নদীতে পড়ে যায়। যমুনা নদীর পানিতে তীব্র স্রোত বইছে। এ কারণে নিখোঁজ জুনায়েদের সন্ধানে বিকেলে ভাটির দিকে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। তাতে তার সন্ধান না পাওয়া গেলে রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে ডাকা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।