Prothomalo:
2025-09-18@04:58:44 GMT

কিশোর–কিশোরী নিয়ে সচেতন হোন

Published: 15th, February 2025 GMT

বিশ্বজুড়ে পর্নোগ্রাফি সংগ্রহ, সরবরাহ ও বিপণনের বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে অসচেতনতা ও অসতর্কতার কারণে এর বড় শিকার হচ্ছে অল্পবয়সীরা। শুধু তা–ই নয়, এসব প্ল্যাটফর্মে অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের প্ররোচনায় পড়ে অনেকের জীবনে নেমে আসছে কালো অধ্যায়। ভুক্তভোগীর পরিবার হচ্ছে সামাজিকভাবে অপদস্থ। এর ফলে নতুন এক সামাজিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। বিষয়টি উদ্বেগজনক।

ফেসবুক, টিকটকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাত, মানসিক অস্থিরতা ও অপরাধপ্রবণতা কিশোর–কিশোরী উভয়কেই আক্রান্ত করছে ঠিকই, কিন্তু কিশোরীরা আলাদাভাবে শিকার হওয়ার বিষয়টি গুরুতর। কারণ, এর সঙ্গে যৌন সহিংসতা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিষয়টি যুক্ত হয়ে পড়ে। এসব প্ল্যাটফর্মে অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তুই থাকে নারীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব বয়সী নারীই যৌন হয়রানির শিকার হন, তবে অল্পবয়সীদের সহজে ফাঁদে ফেলানো যায় এবং এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি ও অধিক নেতিবাচক। ভুক্তভোগীদের ভবিষ্যৎ জীবনও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। 

সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা শহরে দুটি ঘটনা ঘটে। একটি ঘটনায় হাতিরঝিলে ১৭ বছরের একজন কিশোরীর লাশ উদ্ধার হয়। আরেকটি ঘটনা হচ্ছে মোহাম্মদপুর থেকে ১১ বছর বয়সী এক কিশোরী ‘নিখোঁজ’ হয়। দ্বিতীয় কিশোরীও প্রথম কিশোরীর মতো ভয়াবহতার শিকার হলো কি না, এমন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। তবে সৌভাগ্যক্রমে তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়। উদ্ধারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েটি ও তার পরিবার ঘৃণা–বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের মুখে পড়ে। ন্যূনতম নীতিনৈতিকতা ও আইন অনুসরণ না করে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ পরিবেশন করা হয়, যা অভিভাবকদের মধ্যে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার ভয় আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হওয়া অপরাধপ্রবণ ব্যক্তিদের প্ররোচনায় এই দুই কিশোরী মূলত ঘর ছেড়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ ধরনের অনেক ঘটনা সংবাদমাধ্যমগুলোয় উঠে এসেছে। ফলে বিশেষজ্ঞরা বারবার পারিবারিক সচেতনতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন। পরিবারে প্রাপ্তবয়স্কদের স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সংযমী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। কারণ, বড়দের কারণে অল্পবয়সীরা এতে প্রভাবিত হয়ে থাকে। অল্পবয়সীদের কাছে স্মার্টফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট সহজলভ্য হয়ে যাওয়াটা এখানে বড় ঝুঁকি তৈরি করে। সন্তানের পড়াশোনার জন্য স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে অল্পবয়সীদের দূরে রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাদের নিয়মিত সময় দেওয়া, তাদের সঙ্গে মেশা ও গল্প করা। সচেতনতা বৃদ্ধিতে শিক্ষক ও গণমাধ্যমের ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এসব ঘটনার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকেও হতে হবে সতর্ক। ভুক্তভোগীদের সহায়তা ও অপরাধীদের ধরার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের তৎপরতা বাড়াবে এবং পদক্ষেপ গ্রহণে আরও আন্তরিক ও কৌশলী হবে, সেটিই কাম্য। 

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র অপর ধ হওয় র ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ