যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্ক মার্কিন আমলাতন্ত্রে বড় ধরনের কাটছাঁটের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার ৯ হাজার ৫০০ জনের বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

স্বরাষ্ট্র, জ্বালানি, প্রবীণবিষয়ক, কৃষি এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছে। চাকরির এক বছর হয়নি, এমন কর্মীদের নিশানা করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের

চাকরিচ্যুতির পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব মেনে আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রায় ৭৫ হাজার কর্মী এর মধ্যে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। এই সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে কাজ করা ২৩ লাখ বেসরকারি কর্মীর প্রায় ৩ শতাংশ।

কর সংগ্রহকারী ইন্টারনাল রেভেনিউ সার্ভিস আগামী সপ্তাহে কয়েক হাজার কর্মীকে বরখাস্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি বলেছেন, এ পদক্ষেপের কারণে ১৫ এপ্রিল আয়কর দাখিলের সময়সীমার আগে মার্কিন নাগরিকদের সম্পদ সংকুচিত হতে পারে।

ট্রাম্প মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আকার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি; পাশাপাশি অপচয় ও জালিয়াতির কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থও খরচ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণের পরিমাণ এখন ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার (এক ট্রিলিয়ন সমান ১০ লাখ কোটি ডলার); গত বছর দেশটির বাজেট ঘাটতির পরিমাণও ছিল এক দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক চ কর বরখ স ত র কর ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ