ভুট্টাখেতে পড়ে ছিল রক্তমাখা লাঠি-মুঠোফোন, দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়
Published: 15th, February 2025 GMT
ভুট্টাখেতের কয়েকটি ভাঙা গাছের পাশে পড়ে আছে একটি রক্তমাখা লাঠি আর মুঠোফোন। অদূরে পাকা সড়কের পাশে পাওয়া যায় রক্তমাখা নাইলনের দড়ি। আর সড়কটির কিছু অংশে ছড়িয়ে আছে ছোপ ছোট রক্তের দাগ। আর ভুট্টাখেতের আলপথের পাশে পড়ে আছে দুই বোতল পেট্রল। এ দৃশ্য দেখতে সেখানে ভিড় করে স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ধারণা করছেন, ঘটনাস্থলে কাউকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা পর লাশ গুম করা হয়েছে।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা কাটলা ইউনিয়নের পলি খিয়ারমামুদপুর গ্রামে আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কাটলা-পাঠানচড়া পাকা সড়কসংলগ্ন একটি ভুট্টাখেত থেকে দুপুর ১২টার দিকে এসব আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে সেখানে ভিড় জমায় শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বাঁশের লাঠি, ভুট্টাখেতে পড়ে থাকা রক্তের নমুনা, একটি বোতাম, সিমসহ মুঠোফোন এবং পাকা সড়কের পাশ থেকে রক্তমাখা নাইলন দড়িটি জব্দ করা হয়।
উত্তর দাউদপুর (ব্যাপারীপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুল ইসলাম জানান, আজ সকালে তাঁরা কয়েকজন মিলে জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যান। ওই সময় জমিটির পাশের ভুট্টাখেতে কয়েকটি গাছ ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে সেখানে এসব রক্তমাখা আলামত খুঁজে পান তাঁরা। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে ছুটে আসেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা সামনে দক্ষিণ মাধুপুর জামে মসজিদের উদ্যোগে গতকাল রাতে ‘ইসলামি মাহফিলের’ আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মাহফিল চলাকালে অদূরের দক্ষিণ মাধুপুর নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় মুঠোফোনে ‘ফ্রি ফায়ার’ খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আর এ হাতাহাতিকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে ওই ভুট্টাখেতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের ধারণা। অনেকেই দাবি করেন, কাউকে সেখানে হত্যার পর লাশটি গুম করা হয়েছে।
হাতাহাতির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা সৈকত জানান, গতকাল দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। তবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসাও করা হয়েছিল।
ওসি মমতাজুল হক বলেন, সংগৃহীত আলামত দেখে এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’