এলোপাতাড়ি গুলির পর মৃত ভেবে পিয়ার মোহাম্মদকে ফেলে গেল সন্ত্রাসীরা
Published: 15th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা পিয়ার মোহাম্মদ চৌধুরী বাবু (৩৫)। শনিবার উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের উত্তর গুজরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পিয়ার রাউজান সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খানখানাবাদ গ্রামের মাওলানা নুর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য নিয়ে পিয়ারের সঙ্গে বিরোধ চলছে বিএনপি নেতা গিয়াস কাদের চৌধুরীর আরেক অনুসারী দলটির কর্মী মো.
পিয়ারের সঙ্গে থাকা মোহাম্মদ আরাফাত জানান, গত বৃহস্পতিবার হযরত চাঁদ শাহ (রা.)– এর বার্ষিক ওরস নিয়ে পিয়ারের সঙ্গে রায়হানের ঝামেলা হয়। সকালে মন্দিরের সামনের পুকুরের সেচ কাজ দেখার সময় তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে রায়হান, দিদার, সাজ্জাদসহ ১০-১৫ অস্ত্রধারী গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে বেসরকারি এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ব রাউজান ও কদলপুর ইউনিয়নে অবৈধ পাহাড় কাটা এবং চাঁদার ভাগ-বাটোয়ার নিয়ে পিয়ার ও রায়হানের মধ্যে কয়েক মাস ধরেই বিরোধ চলছে। দু’পক্ষই এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
পিয়ারের মা মোরশেদা বেগম বলেন, ‘পিয়ার রোজা ছিল। সকালে পুকুর সেচের কাজ দেখার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বেলা ১১টার পর খবর পাই, তাকে গুলি করা হয়েছে। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, পিয়ারের উরু, তলপেটসহ একাধিক স্থানে গুলি লেগেছে। নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে পাঠানো হয়েছে।
মন্দিরের পুরহিত তপন চক্রবর্তী বলেন, মন্দিরের সামনের পুকুরে ঘাট তৈরিতে সরকারি বরাদ্দ এসেছে। সাব-কন্ট্রাক্টর হিসেবে পিয়ার কাজ শুরুর জন্য পানি সেচ দিচ্ছেন। সেটি দেখতে এলে শনিবার তাকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা।’
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ঘটনাস্থলে সাত রাউন্ড গুলির খোসা পেয়েছেন তারা। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?