গ্রহাণুর সন্ধান, আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশেও
Published: 15th, February 2025 GMT
চিলির বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন একটি গ্রহাণুর সন্ধান পেয়েছেন, যেটি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। এর আকার খুব বড় নয়। তবে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এমনটা ঘটলে তা হবে সর্বনাশের। কারণ, এই গ্রহাণুতে ৫০০টি পরমাণু বোমার চেয়ে বেশি জ্বালানি জমাট বাঁধা অবস্থায় রয়েছে।
গ্রহাণু হলো, সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা মহাকাশ শিলা। এগুলো গ্রহের তুলনায় অনেক ছোট। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এগুলো ৪৬০ কোটি বছর আগে সৌরজগতের গঠনের অবশিষ্টাংশ।
মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে লাখ লাখ গ্রহাণু ঘুরছে। এই অঞ্চলটিকে প্রধান গ্রহাণু বলয় বলা হয়। কখনও কখনও এগুলো বলয় থেকে বেরিয়ে আসে এবং চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তেমন আশঙ্কা করা হচ্ছে নতুন সন্ধান পাওয়া গ্রহাণু নিয়ে।
পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে এমন বহির্জাগতিক বস্তুর প্রতি বিজ্ঞানীরা সারাক্ষণ নজর রাখেন। এপির খবরে বলা হয়, চিলির একদল বিজ্ঞানী গত ডিসেম্বরে ২০২৪ ওয়াইআর৪ শনাক্ত করেন। এর প্রস্থ ৪০ থেকে ৯০ মিটার। পরে ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা আরও তথ্য সরবরাহ করেন। শুরুর দিকে সবাই আশঙ্কা করেছিলেন, একটি পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা ১ শতাংশ। তবে গত বৃহস্পতিবার এই পূর্বাভাস বাড়ানোয় এ নিয়ে হইচই পড়ে গেছে।
টাইমের খবরে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে ইউএস স্পেস এজেন্সি এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি পূর্বাভাস দিয়েছিল, গ্রহাণুটির আঘাত হানার আশঙ্কা ১.
বিজ্ঞানীরা মোটামুটি হিসাব কষে বলেছেন, ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর এটি আঘাত হানতে পারে। শনাক্ত হওয়ার দুই মাসের মধ্যে গ্রহাণুটির আঘাত হানার পূর্বাভাস যেভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, প্রায় সাত বছর পর তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সে প্রশ্ন একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটির সম্ভাব্য গতিপথের একটি নকশা এঁকেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান রয়েছে। তাদের মতে, পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর থেকে উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূল, আরব সাগর এবং দক্ষিণ এশিয়া পর্যন্ত এর লক্ষ্যপথ হতে পারে।
নাসার সেন্টার ফর নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের পরিচালক পল চোডাস বলেন, ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আশঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
শীর্ষ তারকা হওয়ার দৌড়ে কখনও অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও ২০০৮ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় সেরা শিল্পীর মুকুট মাথায় উঠেছিল, তবু ধীরলয়ে পথ হেঁটে গেছেন। নিজের কাজে অতিমাত্রার উচ্ছ্বাসও দেখাননি কখনও। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন সবসময়। গানে গানে কুড়িয়ে চলেছেন শ্রোতার ভালোবাসা। এ কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করে তাঁকে চিনে নেওয়া যায়। বলছি, কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজার কথা। গানের ভুবনে অন্তহীন পথচলায় যিনি এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন প্রায় দেড় যুগের পথ। সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার রহস্যটা কী? শুরুতে যখন এ প্রশ্ন লিজার সামনে তুলে আনা হলো, তখন দেখা গেল, লিজা নিজেই এর উত্তর খুঁজতে বসে গেছেন। এ পর্যায়ে হেসে বললেন, ‘না, এর উত্তর সত্যি জানা নেই। আসলে আমি তো গান গাই শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ আর ভালোবাসা কুড়ানোর জন্য। হ্যাঁ, শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে গানের চর্চা ধরে রেখেছি বললে ভুল হবে না। তারপরও প্রতিটি আয়োজনে শ্রোতার ভালোলাগা, মন্দলাগাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এতে করে কতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি। সেই জনপ্রিয়তা শুরু থেকে একই রকম আছে কিনা– সেটি তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন।’ লিজার এ কথা থেকে বোঝা যায়, যাদের কারণে শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, সেই শ্রোতা তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেখানে তাঁর গানগুলো ছিল চালিকাশক্তি। তবে ১৭ বছরের সংগীতের এ পথচলায় লিজার কণ্ঠে মেলোডি গান বেশি শুনতে পাওয়া গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দেড় যুগে নানা ধরনের গান গেয়েছি, তবু কেন জানি শ্রোতারা আমাকে মেলোডি গানের শিল্পীদের দলে রেখে দিয়েছেন। অস্বীকার করব না যে, আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান ভক্তরা বেশি শুনতে চান, সে ধরনের গান বেশি গাই। এটিও ঠিক যে, মেলো কিংবা স্যাড-রোমান্টিক গানের প্রতি শ্রোতার ভালোলাগা সবসময় ছিল। এখনও অনেকে মেলোডি ছাড়া গানের কথা ভাবতে পারেন না। এজন্য নিরীক্ষাধর্মী কাজ করলেও আমি চাই না মেলোডি থেকে কখনও দূরে সরে থাকতে। তাই মেলোডি গান যেমন গাইছি, তেমনি গানের নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছি।’ লিজার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তা সর্বশেষ প্রকাশিত গানগুলোর শুনলে প্রমাণ মেলে। ক’দিন আগে বিটিভির ‘বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠানে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহিনের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার নামে’ গানে যে লিজাকে শ্রোতা আবিষ্কার করবেন, তার সঙ্গে মেলানো কঠিন হবে সামজ ও রিজানের সঙ্গে ‘তিতা কথা’ গানের লিজাকে। আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ‘খুব প্রিয় আমার’, ‘তুমি এলে’, ‘পূর্ণিমা চাঁদ’ গানগুলোয় লিজা অতীতের গায়কীকে ছাপিয়ে কীভাবে আরও নতুন হয়ে নিজ কণ্ঠ তুলে এনেছেন।
মাঝে কিংবদন্তি শিল্পীদের বেশ কিছু কালজয়ী গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংগীতবোদ্ধাদের। স্টেজ শো, রেডিও, টিভির আয়োজন থেমে শুরু করে সিনেমার প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি অন্যদের চেয়ে কোনোভাবে পিছিয়ে নন। এককথায়, বহমান সময়টিকে সুরেলা করে রেখেছেন অনিন্দ্য কণ্ঠ জাদুতে।
আগামীতেও লিজার কণ্ঠ বাতাসে ভেসে বেড়াবে– এ অনুমান করা যায়।