বর্তমানে অনেকেই ক্রাইসিস অপরচুনিটি টার্মটির সঙ্গে পরিচিত। চীনা দর্শনের এই টার্ম আধুনিক যুগে জন এফ কেনেডি, উইন্সটন চার্চিল ও পিটার ড্রাকারের মতো কুশলী পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের হাত ধরে জনপ্রিয়তা পায়। ক্রাইসিস অপরচুনিটি এমন একটি ধারণা, যাতে সংকট বা সমস্যাকে সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। অর্থাৎ যে কোনো সংকটের মধ্যেই নতুন সম্ভাবনা থাকে; যা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে উন্নয়ন, পরিবর্তন ও অগ্রগতি সম্ভব। যেমন– সাম্প্রতিক সময়ে কভিড-১৯ সংকট বিশ্বে লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিলেও এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতি, ডিজিটালাইজেশনের প্রসার, অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা ও ব্যবসার প্রসারে জোরালো ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে ১৯১২ সালের টাইটানিকডুবিতে হাজারো মানুষের মৃত্যু হলেও তা সমুদ্রে জীবনের নিরাপত্তাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ (সোলাস) প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক আইস প্যাট্রল (আইআইপি) চালুসহ জাহাজের নকশায় পরিবর্তন ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। 

ক্রাইসিস অপরচুনিটিকে কাজে লাগিয়ে একদিকে যেমন উন্নয়ন ও পজিটিভ পরিবর্তন করা হয়, তেমনিভাবে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে এটি ব্যবহার করেন। বিশেষ করে রাজনীতি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘটলেও আমরা তা বুঝতে পারি না।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে যাত্রীবাহী প্লেনের সঙ্গে সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষের ঘটনায় ৬০ জনের বেশি আরোহী নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই এ দুর্ঘটনার জন্য হেলিকপ্টারটিকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা গেছে এবং তদন্তের পর হয়তো দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি এ দুর্ঘটনার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জো বাইডেনের ডিইআই (ডাইভারসিটি বা বৈচিত্র্য, ইকুয়ালিটি বা সাম্য ও এনক্লুসিভ বা অন্তর্ভুক্তি) নীতিকে দায়ী করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাহী আদেশ জারি করার অতীতের সব রেকর্ড ভাঙলেও তিনি শুরুর দিকে যেসব নীতি বাতিল করেছেন, তার মধ্যে ডিইআই একটি। ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠিনভাবে এর বিরোধিতা করেন। কারণ, তিনি যে বিভক্তির রাজনীতি করেন, ডিইআই ধারণাটি ঠিক তার বিপরীত। এ জন্য তিনি তাঁর (অপ) রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিমান দুর্ঘটনার জন্য ডিইআইকে দায়ী করেন। 

যুক্তরাষ্ট্রে যেটিকে ডিইআই বলা হয়, যুক্তরাজ্যে সেটিকে ইডিআই বলে। যুক্তরাজ্যে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইডিআই কমিটির একজন সদস্য হিসেবে আমি দেখেছি, ইডিআই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও মূল্যবোধের ধারণা; যা প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাক্ষেত্র ও সামাজিক জীবনে সমতা, বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন একটি ধারণা নিয়ে এবার ক্ষমতায় এসেছেন, যার মূল ভিত্তি– সব মানুষ সমান নয়। সবার অধিকারও সমান না। তিনি ব্যবসায়ের লাভ-ক্ষতির মতো করে রাষ্ট্রজীবনকে মূল্যায়ন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যদি সেখানকার কোনো বড় পদে কৃষ্ণাঙ্গ কেউ দায়িত্বে থাকেন, সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডিইআই বলে কৌশলে বর্ণবাদকে উস্কে দিচ্ছেন। অন্যদিকে ট্রাম্পের অন্যতম সহযোগী ইলন মাস্ক ডিইআইকে পরিহাস করে ডিআইই (ডাই) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। 

প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আনভেরিফায়েড বা অশ্লীল ভাষা প্রত্যাশিত না হলেও ট্রাম্প তা হরহামেশাই করে চলছেন। কথাবার্তায় ন্যূনতম শালীনতা না রেখেই তিনি মানুষকে ‘অপরাধী’, ‘এলিয়েন’ হিসেবে সম্বোধন করছেন। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ছাড়া করতে তাদের হাত-পায়ে শিকল পরিয়ে পশুর মতো সামরিক বিমানে করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছেন। এমনকি তিনি গুয়ানতানামো বে-তে অবৈধ অভিবাসী ‘অপরাধী’র জন্য ৩০ হাজার বেড তৈরির নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। কারণ, গুয়ানতানামো বে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূমির বাইরে হওয়ায় সেখানে পাঠানো অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সুরক্ষা পাওয়া কঠিন। অন্যদিকে সেখানে অমানবিক আচরণ করলেও সেটি সহসাই লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা সম্ভব। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুধু নির্বাহী আদেশেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখছেন না। তিনি তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পলিসি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে দেশকে বের করে এনেছেন। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য, অনুদান ও ফান্ডিং কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ইলন মাস্কের মতো সাবেক টুইটারের কর্মী ছাঁটাইয়ের নীতি অনুসরণ করে তিনিও প্রায় একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করে নিজ দেশের ২০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে চাকরি ছাড়ার জন্য ই-মেইল পাঠিয়েছেন। আট মাসের বেতন এককালীন দেওয়ার ‘লোভ’ দেখিয়ে পাঠানো এসব ই-মেইলের সঙ্গে একটি পদত্যাগপত্রের নমুনাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে যা লেখা হয়েছে, তাতে চাকরি ছাড়লে তাঁর জন্য ট্রাম্প প্রশাসন নয়; বরং যিনি ছাড়ছেন তিনিই এর জন্য দায়ী। 
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর অন্যতম সহচর ধনকুবের ইলন মাস্ক মিলে সম্ভবত নতুন এক ‘ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ রচনা করতে চাচ্ছেন, যেখানে তারা প্রবলভাবেই বাক্‌স্বাধীনতার সংজ্ঞা নিজেদের মতো করে লিখতে চাচ্ছেন। রাষ্ট্রের কল্যাণমুখী হওয়ার প্রথাগত ধ্যান-ধারণা বদলে দিয়ে তারা একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিন্তা করছেন। যেখানে সবকিছুকে লাভ-লোকসানের পাল্লায় মাপা হচ্ছে। নিজেদের মতাদর্শ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে উগ্র ডানপন্থাকে উস্কে দিচ্ছেন। অবাক বিষয় হলো, উদারপন্থি দেশ হিসেবে পরিচিত উত্তর আমেরিকার কানাডা ও ইউরোপের জার্মানির রাজনৈতিক নেতারা পর্যন্ত অভিবাসী ইস্যুতে ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’-এর মাধ্যমে আসলে কোন আমেরিকা গড়তে চাচ্ছেন, তা হয়তো তিনিই ভালো জানেন। কারণ, অভিবাসীর বিষয়টি চিন্তা করলে ট্রাম্পের পূর্বসূরিরাও সেখানকার অভিবাসী ছিলেন। আমেরিকা রেড ইন্ডিয়ানদের আদি নিবাস, কোনো শ্বেতাঙ্গের নয়।  বিখ্যাত ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আর্নল্ড টয়নবি ‘অ্যা স্টাডি অব হিস্টরি’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘সিভিলাইজেশনস ডাই ফ্রম সুইসাইড নট মার্ডার।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাব কমানোর বন্দোবস্ত তৈরি করে দিচ্ছেন। তাঁর এমন সব পদক্ষেপ রাশিয়া, চীন কিংবা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী দেশগুলোর জন্য শুল্ক আরোপ ও নিষেধাজ্ঞার মতো কিছু ক্রাইসিস নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বৈশ্বিক রাজনীতিতে চালকের আসনে বসার এক বিরল ও সুবর্ণ সুযোগও নিয়ে এসেছে। এ কারণে আগামী বিশ্বনেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে নতুন কোনো দেশ বা জোট যদি চালকের আসনে থাকে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে হয়তো একশ্রেণির মানুষ লাভবান হয়, কিন্তু বড় একটি অংশ এই সুবিধার বাইরে থাকে। এতে একদিকে যেমন বাড়বে বিভক্তি-বৈষম্য, অন্যদিকে দুর্বল হবে রাষ্ট্রের সফট পাওয়ার। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো আগামী চার বছর পর বিদায় নেবেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত রেখে যাবেন, তা শুকাতে হয়তো কয়েক যুগ লেগে যাবে।

মো.

ইমরান আহম্মেদ: পিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার 
বাংলাদেশ পুলিশ; যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের পলিটিকস 
ও ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিস বিভাগের 
পিএইচডি গবেষক
[email protected]
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন র কর ছ ন আম র ক র জন ত র জন য ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ