ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শখ পূরণ করতে শুক্রবার হেলিকপ্টারে ও পালকিকে চড়িয়ে নববধূকে বাড়িতে আনলেন অভিষেক রায় প্রীতম নামে এক বর। এ সময় হেলিকপ্টার দেখতে শতশত লোক ভিড় জমান। 

বর অভিষেক রায় প্রীতম পেশায় একজন চার্টাড একাউনটেন্টেড। তিনি বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) নেতা ডা.

পিবি রায় সুপ্রিয় ও জয়া সাহার ছেলে। শুক্রবার বিকেলে তিনি জেলা শহরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বোর্ডিং মাঠে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার বড়হাটি গ্রাম থেকে ববধূকে হেলিকপ্টারে উড়িয়ে আনা হয়। পরে সেখান থেকে পালকিতে করে নববধূকে নেওয়া হয় বাড়িতে।

নববধূ শ্রেয়া সাহা প্রমি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার বড়হাটি গ্রামের বাসিন্দা পংকজ কুমার সাহা ও সুজলা রানী সাহার মেয়ে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কনের বাড়িতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

প্রীতম জানান, বাবার ইচ্ছে অনুযায়ী হেলিকপ্টারে ও ছোট মামা প্রশান্ত সাহার ইচ্ছে অনুযায়ী পালকিতে করে নববধূকে বাড়ি আনা হয়েছে। আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

কনে শ্রেয়া সাহা প্রমি বলেন, ‘এমন আয়োজনের জন্য আমি শ্বশুর বাড়ির লোকদের কাছে কৃতজ্ঞ। এর আগে আমি কখনও পালকিতে ও হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করিনি। তাই আমার বেশ ভাল লেগেছে। আজকের দিনটি সারাজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি সবার কাছে আশীর্বাদ কামনা করছি।’

বরের বাবা ড্যাব নেতা ডা. পিবি রায় সুপ্রিয় বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ও স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে করে ছেলের বউকে আনা। সেই ইচ্ছা ও স্বপ্ন থেকেই বধূবরণের জন্যে এই আয়োজন করেছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ