শিশুদের প্রায়ই জ্বরের সঙ্গে ত্বকে দানা দানা বা র‍্যাশ দেখা দেয়। নানা কারণে এটি হতে পারে। অনেক সময় এ র‍্যাশের ধরন দেখেই নির্ধারণ করা যায় রোগটা কী। আসুন জেনে নিই পরিচিত কিছু রোগের কথা, যেখানে জ্বর ও র‍্যাশ হয়।

হাম

শিশুদের হাম বা মিজলস হলে শরীরে ছোট লালচে দানা দেখা দেয়। প্রথমে কানের পেছনে বা মুখে শুরু হয় এ র‍্যাশ। এরপর সারা গায়ে ছড়ায়। হাম ভাইরাসজনিত রোগ এবং এটি সংক্রামক। অন্য সব ভাইরাস জ্বরের মতো দুই সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়।

জলবসন্ত

জলবসন্ত বা চিকেন পক্সে যে র‍্যাশ ওঠে, তা হামের মতো লাল দানা নয়; বরং ক্ষুদ্র ফুসকুড়ির মতো। এই র‍্যাশ প্রথমে মুখ, বুক ও পিঠজুড়ে হয়। তবে সারা শরীরেই হতে পারে। ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয় বলে এরও তেমন চিকিৎসা নেই। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল এবং চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন দিলেই চলে। সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যে শিশু সেরে ওঠে।

রুবেলা

রুবেলা অনেকটা হামের মতোই। তাই এর আরেক নাম জার্মান মিজলস। এতে হামের মতোই লালচে বা গোলাপি ছোট দানা ওঠে; সঙ্গে জ্বর, সর্দি-কাশি থাকে। অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণের মতো এটিও নিজে নিজেই সেরে যায়।

হ্যান্ড, ফুট ও মাউথ ডিজিজ

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে স্কুলগামী শিশুদের এর সংক্রমণ বেশ হচ্ছে। এতে জ্বরের সঙ্গে মুখের চারপাশ, হাত ও পায়ের তালুতে র‍্যাশ ওঠে। এটিও দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়।

ডেঙ্গু

দেশে এখন ডেঙ্গু প্রায় সারা বছরই হয়। তবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত পিক মৌসুম। ডেঙ্গুতে সাধারণত জ্বরের দুই বা তিন দিনে গায়ে ছোট লাল দানা ওঠে। বুকে-পিঠে বেশি দেখা যায়। ডেঙ্গুর র‍্যাশ বেশি দিন থাকে না।

কী করবেন

চিকিৎসক র‍্যাশের ধরন দেখে কোন ভাইরাস দায়ী, তা অনেক সময় শনাক্ত করতে পারেন।

বেশির ভাগ ভাইরাসজনিত জ্বর ও র‍্যাশে তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। জ্বরে প্যারাসিটামল, চুলকানিতে অ্যান্টিহিস্টামিন বা মলম এবং বিশ্রাম ও প্রচুর পানি পান করাতে হবে।

নখ দিয়ে চুলকানো ঠিক নয়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শিশুকে আলাদা রাখতে হবে।

যেহেতু এসব রোগ সংক্রামক, তাই পুরোপুরি না সারা পর্যন্ত শিশুদের স্কুলে পাঠানো যাবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ বর র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ