ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে জরুরি সম্মেলনে বসতে চলেছেন ইউরোপের নেতারা। এ যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাওয়ার কথা এরই মধ্যে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু ওই আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না—ইউক্রেন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ গতকাল শনিবার স্পষ্ট করেই এ কথা বলেছেন। এ নিয়ে উদ্বেগ থেকে ইউরোপের দেশগুলো জরুরি ওই সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোরস্কি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জরুরি ওই সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। তবে মাখোঁ এখনো সম্মেলনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেননি।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্যারিসে ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। স্টারমার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তায় এমন মুহূর্ত ২০-৩০ বছরে একবারই আসে এবং এটা স্পষ্ট যে ন্যাটো (পরিচালনায়) ইউরোপকে আরও বড় ভূমিকা নিতে হবে।’

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পেতে কয়েক দিনের মধ্যে আলোচনায় বসতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা, বৈঠক হবে সৌদি আরবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ হোয়াইট হাউসের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থাকবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনকেও ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তাঁর দেশ এমন কোনো আমন্ত্রণ পায়নি।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় ইউরোপকে না রাখার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে ট্রাম্পের দূত কেইথ কেলগ বলেছিলেন, এর আগের আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল; কারণ, অনেক বেশি পক্ষ সেগুলোতে জড়িত ছিল।

ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে লড়াই বন্ধে ২০১৫ সালে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়েছিল, এটি মিনস্ক চুক্তি নামে পরিচিত। ব্যর্থ ওই চুক্তি ইউরোপকে এখনো তাড়া করে ফেরে।

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ন্যাটোসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউরোপের নেতাদের মতপার্থক্যের জের যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কিয়ার স্টারমার জানেন, এই দূরত্ব মেটাতে যুক্তরাজ্যকে ভূমিকা রাখতে হবে।

এ মাসের শেষ দিকে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন স্টারমার। ওই সময় তিনি ট্রাম্পের কাছে ইউরোপের নেতাদের অবস্থান তুলে ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্টারমার ওয়াশিংটন থেকে ফিরে আসার পর ইউরোপীয় নেতারা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও জানা যাচ্ছে।

কিয়ার স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ঐক্য ধরে রাখা নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য কাজ করবে।

স্টারমার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এমন মুহূর্ত ২০-৩০ বছরে একবারই আসে, যেখানে আমাদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় এবং আজ আমরা রাশিয়ার হুমকির মুখোমুখি। এটা পরিষ্কার যে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ও রাশিয়া যে হুমকি দিচ্ছে, তা মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে গেলে ইউরোপকে ন্যাটোতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’

আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না: ট্রাম্পের দূত১৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউর প র ন ত বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ