বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নানা প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’-এ ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এই অর্থায়ন বাতিলের কথা জানায় ডিওজিই। তাতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের দেওয়া অর্থ নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোয় (প্রকল্প) খরচ হতে যাচ্ছিল, যেগুলোর সব কটি বাতিল করা হয়েছে।’ এরপর ধারাবাহিকভাবে ওই প্রকল্পগুলো, প্রকল্প বাস্তবায়নের দেশ ও অঞ্চল এবং অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ (এসপিএল) প্রকল্পে অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলো ও ভোটারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করা হয়।

এক্সে ডিওজিইর পোস্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালেও বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো-সংক্রান্ত প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। আর নেপালের একাধিক প্রকল্পে বাতিল করা হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ ছাড়া এ তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মোজাম্বিক, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি ও মিসর। এশিয়া মহাদেশ ও আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলকেন্দ্রিক দুটি প্রকল্পেও অর্থ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর দেশটিতে সরকারি দক্ষতা বিভাগ বা ডিওজিই নামের বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ককে। ডিওজিইর মাধ্যমে সরকারি ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় সংকোচনে এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছেন ইলন মাস্ক। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ হাজার ৫০০ জনের বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সহায়তা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছিল ইউএসএআইডি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক প রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ