যে ১০ দেশ যুব বেকারত্বে শীর্ষে, বাংলাদেশের কী অবস্থা
Published: 17th, February 2025 GMT
যুব বেকারত্ব কী
১৫-২৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরা, যাঁরা কাজ করতে সক্ষম ও আগ্রহী, কিন্তু উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছেন না, তাঁরাই যুব বেকার। এটি অর্থনৈতিক মন্দা, অপ্রতুল কর্মসংস্থান, দক্ষতার অভাব, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী গড় যুব বেকারত্ব হার কতআন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের (আইএইচডি) একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী যুব বেকারত্বের হার ছিল ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক ট্রেন্ডস ২০২৪ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী যুব বেকারত্বের হার ছিল ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। পাবলিক ইনফরমেশন বুকের (পিআইবি) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
যুব বেকারত্বে শীর্ষ ১০ দেশ১.
দক্ষিণ আফ্রিকা
যুব বেকারত্বের হার: ৬০ দশমিক ২ শতাংশ
২. স্পেন
যুব বেকারত্ব হার: ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ
৩. ফ্রান্স
যুব বেকারত্বের হার: ২০ দশমিক ৪ শতাংশ
৪. ইতালি
যুব বেকারত্বের হার: ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ
৫. চীন
যুব বেকারত্বের হার: ১৭ দশমিক ১ শতাংশ
৬. তুরস্ক
যুব বেকারত্ব হার: ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ
৭. কানাডা
যুব বেকারত্ব হার: ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ
৮. যুক্তরাজ্য
যুব বেকারত্বের হার: ১২ দশমিক ৮ শতাংশ
৯. অস্ট্রেলিয়া
যুব বেকারত্বের হার: ৯ দশমিক ১ শতাংশ
১০. যুক্তরাষ্ট্র
যুব বেকারত্বের হার: ৯ শতাংশ
বাংলাদেশের যুব বেকারত্বের অবস্থানবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের সামগ্রিক বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এর অর্থ হলো, এক বছরে বেকার ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার বেড়েছে। মোট বেকার মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬০ হাজার, যার মধ্যে ১৭ লাখ ৯ হাজার পুরুষ এবং ৮ লাখ ৭০ হাজার নারী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চিত্র আরও খারাপ হতে পারে এবং প্রকৃত বেকারত্ব হার হতে পারে ১০ শতাংশের কাছাকাছি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বিবিএস
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দশ ম ক ৪
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।