যুব বেকারত্ব কী

১৫-২৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরা, যাঁরা কাজ করতে সক্ষম ও আগ্রহী, কিন্তু উপযুক্ত চাকরি পাচ্ছেন না, তাঁরাই যুব বেকার। এটি অর্থনৈতিক মন্দা, অপ্রতুল কর্মসংস্থান, দক্ষতার অভাব, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী গড় যুব বেকারত্ব হার কত

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের (আইএইচ‌ডি) একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী যুব বেকারত্বের হার ছিল ১৫ দশ‌মিক ৬ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়‌মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক ট্রেন্ডস ২০২৪ অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী যুব বেকারত্বের হার ছিল ১৩ দশ‌মিক ৩ শতাংশ। পাব‌লিক ইনফর‌মেশন বুকের (পিআইবি) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

যুব বেকারত্বে শীর্ষ ১০ দেশ

১.

দক্ষিণ আফ্রিকা

যুব বেকারত্বের হার: ৬০ দশ‌মিক ২ শতাংশ

২. স্পেন

যুব বেকারত্ব হার: ২৫ দশ‌মিক ৩ শতাংশ

৩. ফ্রান্স

যুব বেকারত্বের হার: ২০ দশ‌মিক ৪ শতাংশ

৪. ইতালি

যুব বেকারত্বের হার: ১৯ দশ‌মিক ৪ শতাংশ

৫. চীন

যুব বেকারত্বের হার: ১৭ দশ‌মিক ১ শতাংশ

৬. তুরস্ক

যুব বেকারত্ব হার: ১৫ দশ‌মিক ৮ শতাংশ

৭. কানাডা

যুব বেকারত্ব হার: ১৪ দশ‌মিক ৪ শতাংশ

৮. যুক্তরাজ্য

যুব বেকারত্বের হার: ১২ দশ‌মিক ৮ শতাংশ

৯. অস্ট্রেলিয়া

যুব বেকারত্বের হার: ৯ দশ‌মিক ১ শতাংশ

১০. যুক্তরাষ্ট্র

যুব বেকারত্বের হার: ৯ শতাংশ

বাংলাদেশের যুব বেকার‌ত্বের অবস্থান

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বি‌বিএস) ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের সামগ্রিক বেকারত্বের হার ৪ দশ‌মিক ৪৯ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৪ দশ‌মিক শূন্য ৭ শতাংশ। এর অর্থ হলো, এক বছরে বেকার ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার বেড়েছে। মোট বেকার মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬০ হাজার, যার মধ্যে ১৭ লাখ ৯ হাজার পুরুষ এবং ৮ লাখ ৭০ হাজার নারী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চিত্র আরও খারাপ হতে পারে এবং প্রকৃত বেকারত্ব হার হতে পারে ১০ শতাংশের কাছাকাছি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বি‌বিএস 

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দশ ম ক ৪

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন

যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।

যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে

২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’

গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন