টিকটকের নীতিমালা (কমিউনিটি গাইডলাইন) লঙ্ঘন করায় গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ থেকে প্রকাশ করা (আপলোড) ১ কোটি ১৬ লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে টিকটক। নীতিমালা লঙ্ঘন করে ভিডিওগুলোর মধ্যে ৯৬ শতাংশই প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে ফেলা হয়েছে। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ডিজিটাল সেফটি সামিট বাংলাদেশ ২০২৫’–এ এসব তথ্য জানিয়েছে টিকটক কর্তৃপক্ষ।

টিকটক ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে টিকটকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট রিলেশনস বিভাগের প্রধান ফেরদৌস আল মুত্তাকিন বলেন, ডিজিটাল সুরক্ষা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই টিকটক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ ও অনলাইন কমিউনিটিতে যুক্ত সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে টিকটক।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.

) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভিন্ন মাধ্যম দ্রুত বিকশিত হওয়ার কারণে অনলাইন কমিউনিটি বড় হচ্ছে। এর ফলে তরুণ প্রজন্মের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যবহারকারীদের দায়িত্বশীল ডিজিটাল আচরণ বিকাশ, সবার মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশিদের জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল সিস্টেম তৈরি করতে চাই আমরা। বাংলাদেশ সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না, আমরা সবার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে চাই।

সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের তরুণ–তরুনীদের ডিজিটাল নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টিকটকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে নিরাপদ থাকার কৌশল শেখাতে ডিজিটাল সাক্ষরতা, ভুল তথ্য মোকাবিলা এবং সঠিক ডিজিটাল অভ্যাস নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। সম্মেলনে প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা অংশ নেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট কটক

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ