সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে আসছে নতুন ছাত্রসংগঠন
Published: 17th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে আসছে নতুন ছাত্রসংগঠন। তাঁরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নতুন এই ছাত্রসংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি হবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র একটি সংগঠন। ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’, ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ নীতিতে ছাত্র–নাগরিকের স্বার্থকে বাস্তবায়নের প্রয়াসই হবে এই ছাত্রসংগঠনের মূলমন্ত্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে আজ সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এই সংগঠনের কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একটি অংশ। নতুন ছাত্রসংগঠনের ঘোষণা দেওয়ার আগে আজ ও আগামীকাল মঙ্গলবার সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মতামতের নিতে জনমত জরিপ ও সদস্য সংগ্রহ করা হবে। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সব বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসায় এই প্রচারণা চালানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
তবে নতুন এই ছাত্রসংগঠন কবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে বা এর নাম কী হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়নি। যদিও একাধিক সাবেক সমন্বয়ক প্রথম আলোকে বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার নতুন ছাত্রসংগঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে থাকতে পারেন সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক হতে পারেন সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আবু বাকের মজুমদার ও আবদুল কাদের। এ সময় সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশীদ, জাহিদ আহসানসহ অনেকে তাঁদের পাশে ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাইরে এসে নিজস্ব কর্মসূচি অনুযায়ী নতুন এই ছাত্রসংগঠন পরিচালনা করা হবে। সংগঠনের নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে, সংগঠনটি কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করবে না।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের দখলদারি ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অন্ধ অনুকরণের কারণে তরুণদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ কীভাবে জনবিরোধী অবস্থান নিয়েছিল, তা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেখা গেছে। বিগত দিনের রাজনীতি বুদ্ধি ও বিবেক বিবর্জিত করে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা রক্ষার পুতুলে পরিণত করেছিল।
মধ্যপন্থী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিআদর্শিক বাইনারির সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের বাইরে গিয়ে মধ্যমপন্থী ছাত্ররাজনীতিকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কথা সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বলা হয়, উগ্র ডানপন্থী এবং উগ্র বামপন্থী মতাদর্শের মধ্যে যে সাংস্কৃতিক দূরত্ব, সেই দূরত্বের মাঝখানে দখল বসায় ফ্যাসিবাদ। পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে তৈরি করা সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় ইস্যু, রাজনৈতিক ইস্যু, মানবাধিকারের ইস্যু, নাগরিক ইস্যু থেকে শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। অন্যদিকে মধ্যমপন্থী ছাত্ররাজনীতিতে একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও সহনশীলতা প্রদর্শনের চর্চা হয়, যাবতীয় সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বে গিয়ে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতির ভিত্তি রচিত হয়।
নতুন ছাত্রসংগঠনের মাধ্যমে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্ররাজনীতি তৈরি করতে চান বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নতুন এই রাজনীতিতে পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হবে না। বিভাজনের রাজনীতিতে অপর পক্ষকে শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে যে জুজুর ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা হয়, সেই রাজনীতির বিপক্ষে অবস্থান হবে এই সংগঠনের। অপরায়ণের রাজনীতি অপরাজনীতিকে শক্তিশালী করে। ফলে সবার অংশগ্রহণে গঠিত হতে যাওয়া নতুন রাজনীতিই ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।
মূলধারার রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যে অনুপস্থিতি, সেটিকে বিবেচনায় নিয়ে নারীর রাজনৈতিক মানস বিনির্মাণ করা, রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নারীবান্ধব করে তোলার মাধ্যমে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির কথাও বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রসংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রশ্নে নিজেদের স্বকীয়তা ধরে রাখতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ক্ষমতা, ভাগবাঁটোয়ারার হিসাবের নিচে চাপা পড়ে গেছে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি। ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’, ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ নীতিতে সব অবস্থায় ছাত্র–নাগরিকের স্বার্থকে বাস্তবায়নের প্রয়াসই হবে নতুন ছাত্রসংগঠনের মূলমন্ত্র।
বাংলাদেশের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে স্বীকার করে ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৮, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪—সব গণ–আন্দোলন ও ছাত্র–জনতার সংগ্রামী চেতনাকে ভিত্তি করে ছাত্ররাজনীতি সক্রিয় থাকবে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, নতুন ছাত্রসংগঠনের আদর্শগত ও চেতনাগত ভিত্তি হবে এই ভূখণ্ডের ইতিহাসের সব গণ–আন্দোলন। নতুন ছাত্ররাজনীতিতে গণতন্ত্রের চর্চাকে পুনর্বহাল করে শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়িত করার প্ল্যাটফর্মগুলোকে পুনর্গঠন করা হবে। নিয়মিত এবং নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ নির্বাচন অব্যাহত রাখার জন্য নতুন ছাত্রসংগঠন সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ক সমন বয়ক র র জন ত র জন ত ত র জন ত ক স গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
অক্ষয়ের সিনেমার আয় ৩৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় কমেডি সিনেমা ফ্র্যাঞ্চাইজি হাউজফুল। এর আগে এ ফ্র্যাঞ্চাইজির চারটি সিনেমা মুক্তি পায়। গত ৬ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির পঞ্চম কিস্তি। অক্ষয় কুমারকে নিয়ে এটি নির্মাণ করেছেন তরুণ মনসুখানি।
বিশ্বের ৭ হাজার পর্দায় মুক্তি পেয়েছে ‘হাউজফুল ৫’। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড সিনেমার মধ্যে প্রথম দিনে তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় করেছে ‘হাউজফুল ৫’ (২১ বা ২৪ কোটি রুপি)। এ তালিকার প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘ছাবা’ (২৯ কোটি রুপি) ও ‘সিকান্দার’ (২৫ কোটি রুপি)।
স্যাকনিল্কের তথ্য অনুসারে, মুক্তির প্রথম দিনে ‘হাউজফুল ৫’ ভারতে আয় করেছে ২৪ কোটি রুপি (নিট), দ্বিতীয় দিনে ৩১ কোটি রুপি (নিট), তৃতীয় দিনে ৩২.৫ কোটি (নিট), চতুর্থ দিনে ১৩ কোটি রুপি (নিট), পঞ্চম দিনে ১১.২৫ কোটি রুপি (নিট), ৬ষ্ঠ দিনে ৮.৫ কোটি রুপি (নিট), সপ্তম দিনে ৭ কোটি রুপি (নিট)। অষ্টম দিনে ৬ কোটি রুপি (নিট), নবম দিনে ৯.৫ কোটি রুপি (নিট), দশম দিনে ১১.৫ কোটি রুপি (নিট)।
আরো পড়ুন:
আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম: আমির খান
জোড়া লাগল অর্জুন-মালাইকার ভাঙা প্রেম!
ভারতে যার মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৮৪.২৫ কোটি রুপি (গ্রস)। বিদেশে আয় করেছে ৫০.৭৫ কোটি রুপি। বিশ্বব্যাপী সিনেমাটি মোট আয় করেছে ২৩৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বেশি)।
বরাবরের মতো অক্ষয় কুমারকে ‘হাউজফুল ফাইভ’ সিনেমায় মজার চরিত্রে পেয়েছেন দর্শকরা। এ ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করবেন অভিষেক বচ্চন, রিতেশ দেশমুখ, সঞ্জয় দত্ত, জ্যাকলিন, নার্গিস ফাখরি, ফারদিন খান, নানা পাটেকর, জ্যাকি শ্রফ, চাঙ্কি পান্ডে, সোনম বাওয়াজ, চিত্রাঙ্গদা সিং প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মাণে ২৪০ কোটি রুপি ব্যয় করেছেন সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে মুক্তি পায় হাউজফুল ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা ‘হাউজফুল’। ২০১২ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল টু’। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল থ্রি’। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় ‘হাউজফুল ফোর’।
ঢাকা/শান্ত