ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের (বিএএসএম) সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।

চুক্তি শেষে বিএএসএম এর পক্ষ থেকে বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সিকিউরিটি মার্কেট শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ ভবনে এ চুক্তি ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। 

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.

নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ইয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন প্রমুখ।

এছাড়াও অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। সেশন কন্ডাক্টর হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটেরে সাদ্দাম হোসেন খান ও রিজভী আহমেদ।

এদিন বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটেসের প্রতিনিধিরা বিভাগটির সঙ্গে সহোযোগিতামূলক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এরই অংশ হিসেবে একজন নবীন সদস্য সিকিউরিটিজ মার্কেটে প্রবেশ করে কিভাবে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

এ বিষয়ে মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসার করা। সেই লক্ষ্যে ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের ম্যাসেজটা পৌঁছে দিতে এ সেশন। একটা শিক্ষিত বিনিয়োগ বাজার তৈরির লক্ষ্যেই আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে ঘুরে এ কর্মশালাগুলো করছি। ভবিষ্যতে যেন তারা সিকিউরিটিজ মার্কেট বিজনেসের জন্য ভালোভাবে তৈরি হতে পারে।”

তিনি বলেন, “আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম বিভাগের সঙ্গে এই এমওইউ চুক্তির মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিনিয়োগ ক্ষেত্রে আর্থিক সাপোর্ট থেকে শুরু সব ধরনের সহায়তা করতে পারব।”

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, “শুধু একাডেমিক জ্ঞানই যথেষ্ট নয়। বর্তমান চ্যালেঞ্জিং বিশ্বে বাঁচতে হলে বাস্তব জ্ঞান দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় সবকিছু দিতে পারে না। তাই বাস্তবিক জ্ঞান ও সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ একাডেমি সিকিউরিটি মার্কেটের সঙ্গে ৫ বছরের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। তাদের কাজের অংশ হিসেবে আজ একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে

সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’

বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।

এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’

আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ