আসামি ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ, থানা ঘেরাও-ভাঙচুর বিএনপি নেতাকর্মীদের
Published: 17th, February 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুরে মাদকসেবীসহ সাত আসামিকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও করেছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী। এসময় ইট পাটকেল ছুড়ে থানার প্রধান ফটকের পাশের চেক পোস্টের গ্লাস ভাঙচুর করেন কয়েকজন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
রোববার সন্ধ্যায় থানা ঘেরাও করে তারা প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে সেদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে পৌরশহরের সাত নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রোহানকে আটক করে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, মনিরামপুর থানার এসআই অমিত কুমারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সবুজ ও রিয়াজ নামে দুজনকে গাঁজাসহ আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ওই রাতেই পুলিশ সেলিম হোসেন নামে চিহ্নিত এক গাঁজা কারবারিকে আটক করে।
কিন্তু অভিযোগ ওঠে, পরদিন শনিবার সকালেই সবুজ ও রিয়াজকে থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এছাড়াও বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শনিবার ইমরান হোসেনসহ আরো চারজনকে আটক করার পর রাতে তাদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর প্রতিবাদে রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মিছিল নিয়ে থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু।
অন্যান্যের মধ্যে এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিল্লাল গাজী, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ, সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুচ আলী জুয়েল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিল্লাল গাজী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান, সদস্য সচিব মাসুদ গাজী প্রমুখ।
সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু অভিযোগ করে বলেন, মনিরামপুর থানা পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের আটক করেছে ঠিকই, কিন্তু রহস্যজনক কারণে আদালতে সোপর্দ না করে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতনের পর সাজানো মামলায় হাজতে পাঠানো হতো। সেসময় পুলিশের নির্বিচার চাঁদাবাজির ভয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী বাড়ি তো দূরের কথা, আশপাশের এলাকায়ও থাকতে পারেননি। এখন দাগি অপরাধী হওয়ার পরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
মিন্টু বলেন, যদি থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়া বন্ধ করা না হয় তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। অবশ্য সমাবেশ শেষে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল কর্মী ইট পাটকেল ছুড়ে থানার প্রধান ফটকের পাশে পুলিশের চেক পোস্টের গ্লাস ভাঙচুর করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, আটকদের মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ছেড়ে দিয়ে দুজনকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে যশোরের পুলিশ সুপার জিয়া উদ্দিন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানা পরিদর্শনে আসেন।
রাতেই পৌরশহরে পুলিশি টহল জোরদার করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশ এসময় পৌরশহরের সাত নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মাকসিদুল আলম রোহানকে আটক করে।
সোমবার সকালে পুলিশের কনস্টেবল শেখর কুমার দত্ত বাদী হয়ে রোহান ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। রোহানকে গতকাল দুপুরে আদালতে চালান দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক ব এনপ ন ত কর ম ছ ত রদল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন। সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল
সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”
কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে।
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ