যশোরের মনিরামপুরে মাদকসেবীসহ সাত আসামিকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও করেছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী। এসময় ইট পাটকেল ছুড়ে থানার প্রধান ফটকের পাশের চেক পোস্টের গ্লাস ভাঙচুর করেন কয়েকজন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

রোববার সন্ধ্যায় থানা ঘেরাও করে তারা প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে সেদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে পৌরশহরের সাত নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রোহানকে আটক করে পুলিশ।

এলাকাবাসী ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, মনিরামপুর থানার এসআই অমিত কুমারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সবুজ ও রিয়াজ নামে দুজনকে গাঁজাসহ আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ওই রাতেই পুলিশ সেলিম হোসেন নামে চিহ্নিত এক গাঁজা কারবারিকে আটক করে।

কিন্তু অভিযোগ ওঠে, পরদিন শনিবার সকালেই সবুজ ও রিয়াজকে থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এছাড়াও বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শনিবার ইমরান হোসেনসহ আরো চারজনকে আটক করার পর রাতে তাদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়।

এর প্রতিবাদে রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে মিছিল নিয়ে থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু। 

অন্যান্যের মধ্যে এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিল্লাল গাজী, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ, সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুচ আলী জুয়েল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বিল্লাল গাজী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান, সদস্য সচিব মাসুদ গাজী প্রমুখ।

সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু অভিযোগ করে বলেন, মনিরামপুর থানা পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের আটক করেছে ঠিকই, কিন্তু রহস্যজনক কারণে আদালতে সোপর্দ না করে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতনের পর সাজানো মামলায় হাজতে পাঠানো হতো। সেসময় পুলিশের নির্বিচার চাঁদাবাজির ভয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী বাড়ি তো দূরের কথা, আশপাশের এলাকায়ও থাকতে পারেননি। এখন দাগি অপরাধী হওয়ার পরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

মিন্টু বলেন, যদি থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়া বন্ধ করা না হয় তবে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। অবশ্য সমাবেশ শেষে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল কর্মী ইট পাটকেল ছুড়ে থানার প্রধান ফটকের পাশে পুলিশের চেক পোস্টের গ্লাস ভাঙচুর করেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, আটকদের মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ছেড়ে দিয়ে দুজনকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।

এদিকে খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে যশোরের পুলিশ সুপার জিয়া উদ্দিন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানা পরিদর্শনে আসেন। 

রাতেই পৌরশহরে পুলিশি টহল জোরদার করে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পুলিশ এসময় পৌরশহরের সাত নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মাকসিদুল আলম রোহানকে আটক করে।

সোমবার সকালে পুলিশের কনস্টেবল শেখর কুমার দত্ত বাদী হয়ে রোহান ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। রোহানকে গতকাল দুপুরে আদালতে চালান দেওয়া হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক ব এনপ ন ত কর ম ছ ত রদল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা

সিদ্ধিরগঞ্জে জোর পূর্বক সম্পত্তি লিখে নিতে সন্ত্রাসী দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে এক প্রবাসীর ৬ তলা বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (১১ জুন) সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় বন্দর থানার গকুলদাসেরবাগ এলাকার আ: বাতেনের মেয়ে ও প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের ভাগ্নী মাহমুদা (৪০) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্ধা তার মামী উম্মে হাবিবা বিন্দু (২৬), মামীর বাবা বাবুল (৫০) ও মামীর মা সখি (৪৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগে মাহমুদা উল্লেখ করেন, গত ৯বছর পূর্বে আমার মামার সাথে উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিবাহ হয়। আমার মামার পরিবারে ২টি পুত্র সন্তান আছে। আমার মামা একজন প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী হওয়ার সুবাদে বিবাদীরা আমার মামার টাকা বিভিন্ন ভাবে অপচয় করিত। গত ৫বছর পূর্বে বিবাদী বাবুল আমার মামার কাছ থেকে জমি ক্রয় ও ব্যবসায়ীক কারণে হাওলাত বাবদ ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।

গত ৩ বছর পূর্বে আমার মামা দেশে এসে তার স্ত্রী বিন্দুর কাছে উক্ত টাকা দাবি করলে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার মামাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করিতে থাকে। এসময় আমার মামা উক্ত বিষয়টি তার শ্বশুর বাবুলকে জানাইলে তারা উক্ত টাকা দিব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে।

এরই উপর ভিত্তি করে গত ২ মাস পূর্বে পুনরায় আমার মামা তার শ্বশুরের কাছে টাকা দাবি করলে তিনি উক্ত টাকা দিবে না মর্মে জানায়। এমনকি আমার মামাকে জানায় আমার মামা যদি সিদ্ধিরগঞ্জের তাঁতখানা এলাকার গোদনাইল মৌজাস্থিত ৬তলা বিশিষ্ট বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তাকে বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করবে।


অভিযোগে মাহমুদা আরো উল্লেখ করেন, গত বুধবার আমার মামার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী সহ আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার আমার মামার বাড়ীতে প্রবেশ করে আমার মামার অজ্ঞাতসারে ভাংচুর চালায়।

এসময় উক্ত বাড়ীতে আমার খালা সালেহা (৫০) অবস্থানকালে তারা তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে তারা উক্ত বাড়ী তালা বদ্ধ করে চলে যায়। এসময় তারা আমার খালাকে জানায় আমার মামা যদি উক্ত বাড়ী তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তারা আমার মামাকে জানে মারিয়া ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্তকারী সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাসান আলী জানান, দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। তবে বাড়িতে তালা দেয়ার বিষয়ে নিজামের স্ত্রী বিন্দু ও তার শ্বশুর বাবুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারা অস্বীকার করেছে। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক তাই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নরসিংদীতে বিএনপি-ছাত্রদল সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩
  • সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা