বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকীকে তাঁর দপ্তরে লাঞ্ছিত করেছেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারের অনুসারীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষা বোর্ডে এ ঘটনা ঘটে। নগরের একটি বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য অ্যাডহক কমিটির প্রস্তাবিত তালিকায় জিয়া সিকদার নামের এক ব্যক্তির নাম ২ নম্বরে থাকায় তাঁর অনুসারীরা এ কাণ্ড ঘটান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্ধশতাধিক যুবক বোর্ড চেয়ারম্যানকে প্রায় ১ ঘণ্টা তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করেন। জিয়া সিকদারের নাম প্রস্তাবিত তালিকায় কেন ২ নম্বরে– তার কৈফিয়ত জানতে চান উত্তেজিত যুবকরা এবং তাঁকে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করার জন্য চেয়ারম্যানকে হুমকি দেন। তাদের মধ্যে মহানগর ছাত্রদল নেতা ইমরান, ইলিয়াস, তুষার, স্বেচ্ছাসেবক দলের তারেক সোলায়মানসহ অনেককে দেখা গেছে।

জানা গেছে, নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকায় ‘এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের’ কমিটি গঠনের জন্য বিভাগীয় কমিশনার তিনজনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান। সেখান থেকে একজনকে সভাপতি চূড়ান্ত করবেন বোর্ড চেয়ারম্যান। ওই তালিকায় ১ নম্বরে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ছালাম মিয়ার স্ত্রীর নাম রয়েছে। সাধারণত সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১ নম্বরে থাকা ব্যক্তিই অগ্রাধিকার পান। জিয়া সিকদারের বাসাও সাগরদী এলাকায়।

বোর্ডের সহকারী সচিব ও মহানগর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রস্তাবিত কমিটির ১ নম্বরে যার নাম রাখা হয়েছে তিনি ফ্যাসিস্ট। এ জন্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গিয়ে বলেছেন, ফ্যাসিস্ট কাউকে রাখা যাবে না।

শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী সমকালকে বলেন, বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির প্যানেলে ২ নম্বরে রাখা হয়েছে বিএনপি নেতা জিয়াকে। একদল কর্মী এসে জানতে চেয়েছেন, কেন জিয়া ভাইয়ের নাম ২ নম্বরে গেল। তিনি বলেন, নগরীর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির প্যানেল বিভাগীয় কমিশনার নির্ধারণ করে তালিকা পাঠান। এখানে আমাদের হাতে কিছুই নেই।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা জিয়া উদ্দিন সিকদার ঢাকায় আছেন জানিয়ে বলেন, যারা গিয়েছিল তাদের তিনি চেনেন না। কেউ তাঁর নাম ব্যবহার করলে কিছু করার নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল ব এনপ কম ট র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ