মেসির ভয়ে কাবু অন্যরা, মেসি কাবু ঠান্ডার ভয়ে
Published: 17th, February 2025 GMT
তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডায় লিওনেল মেসির ফুটবল খেলাটা ঠিক জমে না। ভোগান্তি পোহাতে হয়। ২০২১ সালে টিএনটি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ। দুজনে তখন বার্সেলোনা–সতীর্থ, এখন ইন্টার মায়ামিতে। বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকালে এ বছরের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নামবে মায়ামি। কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে স্পোর্টিং কেসির মুখোমুখি হবে মেসি-সুয়ারেজদের দল। এই ম্যাচের আগে সুয়ারেজ নিশ্চয়ই মেসিকে সাহস জোগাচ্ছেন!
সাহস? আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে ফুটবল ম্যাচে সাহস জোগাতে হবে—এমন ভাবনাই ধৃষ্টতার শামিল! আসলে সমস্যা অন্যখানে। ঠান্ডা! ম্যাচটি খেলতে কানসাস সিটিতে যাবে মায়ামি। দক্ষিণ ফ্লোরিডার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় অভ্যস্ত মায়ামিকে মানিয়ে নিতে হবে কানসাস সিটির প্রচণ্ড ঠান্ডা ও তুষারপাতের সঙ্গে।
আবহাওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর সময় এই ম্যাচের ভেন্যু চিলড্রেনস মার্সি পার্কের তাপমাত্রা মাইনাস ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। হিমেল বাতাসের কারণে এটা শরীরে মাইনাস ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস অনুভূত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। তুষারপাতের সম্ভাবনাও শতকরা ৭৫ শতাংশ। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৯ থেকে ১১ ইঞ্চি পুরু তুষারপাত হতে পারে। এমন প্রতিকূল পরিবেশে মেসির এই ম্যাচ খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ ফ্লোরিডা থেকে উঠে আসা সংবাদকর্মী ফ্রাঙ্কো পানিজো ২০০৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল কাভার করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পানিজোর দাবি, ‘সূত্ররা আমাকে জানিয়েছে, এই ভয়ানক ঠান্ডার মধ্যে (স্থানীয় সময়) মঙ্গলবার স্পোর্টিং কানসাস সিটির বিপক্ষে খেলতে চান না মেসি। তিনি খেলবেন নাকি খেলবেন না, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের প্রথম ম্যাচে মেসির না খেলার সম্ভাবনা আছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এর আগে সবচেয়ে ঠান্ডা পরিবেশের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ খেলার রেকর্ড ২০১৯ সালে। মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কলোরাডো র্যাপিডসের মুখোমুখি হয়েছিল পোর্টল্যান্ড টিম্বার্স।
তবে মায়ামি-স্পোর্টিং কেসি ম্যাচ স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। মায়ামি হেরাল্ড জানিয়েছে, দুই দল এরই মধ্যে এ বিষয়ে কনক্যাকাফ অফিশিয়ালদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বরফশীতল আবহাওয়ার সঙ্গে তুষারপাত হলে ম্যাচটি স্থগিতও হতে পারে। স্পোর্টিং কেসি সভাপতি জ্যাক রিড বলেছেন, ‘ঠান্ডা আলাদা বিষয়—তুষারপাত কেমন হয়, সেটা আমরা দেখব। আমরা প্রস্তুত থাকব। পার্কিং লট, হাঁটার জায়গা পরিষ্কার করার পাশাপাশি ভক্তদের নিরাপদে (স্টেডিয়ামে) আসা নিয়েও ভাবছি আমরা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?