বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেছেন, বিচারের আগে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের এই দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িত প্রত্যেকের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি- খুনিরা এখনও অধরা। তারা পতিত স্বৈরাচার হাসিনার নির্দেশে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে খুনি শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।

সোমবার রাতে কুমিল্লায় নবাব ফয়জুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সহায়তা ও পরিচিতি সভায়  প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

তারিকুল বলেন, ৭২’র সংবিধান একটি ফ্যাসিস্ট সংবিধান। এ সংবিধানের অধীনে যে নির্বাচিত হবে সেই ফ্যাসিস্টে পরিণত হবে। রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিনকে আমরা সরাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আমরা এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব যার মাধ্যমে এ দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত হবে। আমরা মনে করি- তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে। তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাবে। যারা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে তারাই আগামীতে এই দেশের নেতৃত্ব দেবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান কলুষিত রাজনীতির কারণে ভালো মানুষেরা রাজনীতিমুখী হচ্ছে না। এ কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যেভাবে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছি আগামী দিনগুলোতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে তেমনি সব অপশক্তিকে মোকাবিলা করব। আমরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাব। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব রাশেদুল হাসানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইফফাত জাহানারা নাদিয়া, সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ ও মাহমুদুল হাসান প্রমুখ। 

অনুষ্ঠান শেষে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ৩০ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুরোধে শহীদ মিনার ছেড়ে দিয়ে ৩ আগস্টের ছাত্র সমাবেশ শাহবাগে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। এরই অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র সমাবেশের কর্মসূচি ছিল আমাদের। দীর্ঘ প্রস্তুতি শেষে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতিও পাই। তবে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণার পরই গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারি, একই দিনে একই স্থানে জাতীয় নাগরিক পার্টিও সমাবেশ করতে চায়। এরপর তারা একাধিকবার আমাদের কাছে ব্যক্তিগতভাবে এবং আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাবেশের স্থান পরিবর্তনের অনুরোধ জানায়।”

ছাত্রদলের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “আমাদের মতো একটি সংগঠনের জন্য এ ধরনের কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন খুবই দুরূহ ও কষ্টসাধ্য বিষয়। তবুও গণতান্ত্রিক সহাবস্থানে বিশ্বাসী, পরমতসহিঞ্চু, গ্রহণযোগ্য রাজনীতির ধারক হিসেবে আমরা তাদের অনুরোধ বিবেচনায় নিয়েছি। শহীদ মিনারে সমাবেশের অনুমতি আমাদের আগে থাকলেও আমরা শান্তি ও সৌহার্দ্যের বার্তা দিতে চাই। তাই আমরা সমাবেশের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন ৩ আগস্টের ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে শাহবাগে।”

ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “আমরা জানি, রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে কর্মসূচি হলে কিছু জনভোগান্তি হতে পারে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিছক কর্মসূচি স্থান পরিবর্তনের বিষয় নয়—এটি ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে উদারতার অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দিতে চাই।”

তিনি আরো বলেন,  “অভ্যুত্থানের পরও কারো ওপর দমন চালাইনি আমরা, কোন হল বা সিট দখল করিনি। আমাদের রাজনীতির ভাষা উস্কানির বিপরীতে শান্তি, সংঘাতের বিপরীতে উদারতা। যারা সফল অভ্যুত্থানের ‘একক মালিক’ হতে চান, আমরা আশা করি, তারা আমাদের এই অবস্থান থেকে শিক্ষা নেবেন এবং গণতান্ত্রিক সহাবস্থানের পথে ফিরে আসবেন।”

ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিক্ষাঙ্গনে আমরা একটি ইতিবাচক ধারার গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি গড়ে তুলতে চাই। সেখানে থাকবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহাবস্থান এবং রাজনৈতিক পরিশীলন। সেই রাজনীতির শক্তি হবে উদারতা ও পরমতসহিঞ্চুতা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা দাবি করেন, ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তাদের অবদানকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করাই তাদের লক্ষ্য।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
  • তিতুমীর কলেজে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
  • হাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার
  • হাসিনাকে ১০ বার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ কমবে না: নাহিদ 
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • নরসিংদীতে আজ এনসিপির পদযাত্রা 
  • এনসিপির অনুরোধে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করল ছাত্রদল
  • পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
  • ভেনেজুয়েলায় নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে বিরোধীদের প্রতিরোধের ডাক
  • নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পথে নেমেছি: নাহিদ ইসলাম