ইউক্রেন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ বলেছেন, কিয়েভের ওপর কেউ শান্তিচুক্তি চাপিয়ে দেবে না।

গতকাল সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত।

ওয়াশিংটন ভবিষ্যতে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে কি না, সে সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান পরে করা হবে বলে জানান কেইথ কেলগ।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আজ মঙ্গলবার সৌদি আরবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করাসহ যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে।

ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ বলেছেন, তিনি চলতি সপ্তাহেই কিয়েভে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

ব্রাসেলসে ন্যাটো সদর দপ্তরে কেইথ কেলগ সাংবাদিকদের বলেন, একটি সার্বভৌম জাতির (ইউক্রেন) একজন নির্বাচিত নেতার (জেলেনস্কি) ওপর কেউ চুক্তি চাপিয়ে দেবে না।

কেইথ কেলগ জানান, ইউক্রেন বিষয়ে তিনি ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে কথা বলছেন।
ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ইউরোপীয় নেতারা ওয়াশিংটনকে চাপ দিচ্ছেন। তবে কেইথ কেলগের মতে, সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেন বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপে হতবাক হন ইউরোপীয় কর্মকর্তারা।

এ অবস্থায় ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডসের নেতারা গতকাল সোমবার প্যারিসে জরুরি বৈঠক করেন। এই বৈঠকে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তারাও অংশ নেন।

যুক্তরাজ্য, সুইডেন ও জার্মানি বলেছে, তারা ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী পাঠাতে আগ্রহী।
তবে অনেক কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা বিবেচনা করবেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউর প য় ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ