এখন রিলস বানিয়েই অনেকে তারকা হয়ে যাচ্ছেন: তানজিকা
Published: 18th, February 2025 GMT
বিনোদন অঙ্গনে অস্থিরতা নিয়ে নানা অনুষ্ঠান-আয়োজনে কথা বলছেন শিল্পীরা। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সেলিব্রেটি শোতে বিনোদন অঙ্গনের অসঙ্গতি তুলে ধরেন অভিনেত্রী তানজিকা আমিন।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি হাঁটছি, কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি- এ নিয়ে রিলস হচ্ছে। এখনতো রিলস বানিয়েই অনেকে তারকা হয়ে যাচ্ছেন। তারপর দুই লাখ, চার লাখ টাকা করে পারিশ্রমিক হাকাচ্ছেন। এটা তো আমরাও করতে পারি। একটি ছেলে সঙ্গে রেখে ভিডিও করলেই তো হয়।' তিনি বলেন, 'এতদিন যারা অভিনয় শিখে এসেছেন তারা পাচ্ছেন এক নাটকে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। তাদের কোন মূল্য নেই! আর যাদের ভিউ বেশি তাদের কাজে নেওয়া হচ্ছে। তাদের অভিনীত ফিকশনের ছোট ছোট রিল করে যখন ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে, ভিউ বেড়ে যাচ্ছে। ওই শিল্পীরা একটা নাটকের গল্পও বলতে পারবেন না।'
এই দুরবস্থার কারণে অনেক অভিনয়শিল্পী আভিনয় থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তানজিকা বলেন, '‘একটি প্ল্যাটফর্ম ধরুন ‘এক্স’, সেখানে একজন অভিনয়শিল্পী কাজ করেছেন তার নামও 'এক্স'। ওই প্ল্যটফর্মের বানানো তিনটি প্রডাকশন ফ্লপ করলো। অডিয়েন্স দেখলো না। তারপরও পরবর্তী প্রডাকশন ওই শিল্পীকে নিয়ে করা হচ্ছে। ভিউ চক্রের কারণেই এমনটি হচ্ছে। এই ব্যাপারটার জন্য অনেক ভালো অভিনয়শিল্পী পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার রাগে ক্ষোভে ইন্ডাষ্ট্রি থেকে চলে যাচ্ছেন। ইন্ড্রাষ্ট্রি যখন এককেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে, এটি চলতে থাকলে তো ইন্ড্রাষ্ট্রি হয়ে দাঁড়াবে না। এটি তো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ইন্ড্রাষ্ট্রি ছোট হচ্ছে।''
গত বছরের শেষদিকে নতুন জীবন শুরু করেছেন তানজিকা। বিয়ে করেছেন অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাইফ বসুনিয়াকে। ছয় বছর আগে তাদের পরিচয়। এরপর বন্ধুত্ব। পরে বিয়ে। তানজিকার স্বামী ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন। বিয়ের পর অভিনয় ছাড়বেন কিনা, এমন প্রশ্নও উঠে। এ বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘অভিনয় আমার প্রাণের জায়গা, ঢাকা আমার প্রাণের শহর। ফলে দুটোর কোনোটিই ছাড়ছি না। তবে কিছু কারণে আমাকে তো যাওয়া আসার মধ্যে থাকতে হবে।' তানজিকার কথা যে সত্য তার প্রমাণ মেলে। কাজও করছেন সমানতালে। ২৪ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচার শুরু হবে তার অভিনীত ধারাবাহিক অনলাইন,অফলাইন-সিজন টু। এটি পরিচালনা করেছেন সাগর জাহান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি