ইবিতে খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
Published: 18th, February 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের ১০২ নং কক্ষে বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি পরিদর্শনের আয়োজনে এবং ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.
কো-অর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক ড. শাম্মি আখতারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া বক্তব্য দেন জাইকা-স্টির্ক প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মাসামি সাকাই এবং ন্যাশনাল টিম লিডার মো. মাসুদ আলম।
এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষার্থীরা খাদ্য কারখানায় খাদ্য উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপসমূহে দূষণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়াদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে খাদ্যকে নিরাপদ রাখার নানান কৌশল ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বিষয়েও ধারণা লাভ করতে পারবে। এছাড়া দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। কর্মশালায় প্রকল্পের কনসালটেন্টগণ হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মাদ নসরুল্লাহ নিরাপদ খাদ্যের নানাবিধ গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “হল প্রশাসন ও ডাইনিং, ক্যান্টিনের কর্মী ও বাবুর্চিদের আরো সচেতন হতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদ খাবারের বিষয়ে কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে হল প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণসহ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে খাদ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”
এ কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন হলের কর্মী ও বাবুর্চিরা অংশগ্রহণ করেছেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।