চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্মরণীয় পাঁচ ম্যাচ
Published: 18th, February 2025 GMT
২৭ বছরে আটটি টুর্নামেন্ট। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তো স্মরণীয় মুহূর্তের অভাব নেই। আরেকটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যখন দোরগোড়ায়, আইসিসি নিজেরাই বেছে নিয়েছে টুর্নামেন্ট ইতিহাসের সেরা পাঁচ ম্যাচ। সেরা নয়, ক্রম সাজানো হয়েছে বছরের হিসাবে।ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা, সেমিফাইনাল (২০০২)
বীরেন্দর শেবাগ যখন প্রথমবার বল হাতে নিলেন, ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৯ ওভারে ৬২ রান দরকার দক্ষিণ আফ্রিকার। শেবাগ যখন শেষ ওভারটা শুরু করলেন, ৬ বলে দরকার ২১ রান। প্রথম ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া শেবাগকে শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দিলেন জ্যাক ক্যালিস। পরের বলে ক্যালিসকে উইকেটকিপারের ক্যাচ বানিয়ে প্রতিশোধ নেওয়া শেবাগ ওভারের শেষ বলে ল্যান্স ক্লুজনারকে ফিরিয়ে ১০ রানে জিতিয়ে দেন দলকে। ভারত উঠে যায় ফাইনালে।
কলম্বোর ম্যাচটিতে এর আগে ব্যাটিংয়েও ৫৮ বলে শেবাগ করেন ৫৯ রান। ভারত করে ৯ উইকেটে ২৬১ রান। রান তাড়ায় শেবাগ বল হাতে নেওয়ার আগে তরতরিয়ে এগোচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের মাঠে ভারতের পতাকা না থাকার ব্যাখ্যা দিল পিসিবি২ ঘণ্টা আগেওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড, ফাইনাল (২০০৪)শিবনারায়ণ চন্দরপল যখন ফিরলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা কার্যত শেষই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। ২ উইকেট হাতে থাকা দলটির যে আরও ৭১ রান দরকার ছিল। ওভালে সেই ম্যাচটিই আর কোনো উইকেটে না হারিয়েই অবিশ্বাস্যভাবে জিতে চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কোর্টনি ব্রাউন ও ইয়ান ব্র্যাডশর নবম উইকেট জুটি ক্রিকেট–রূপকথায় স্থায়ীভাবেই জায়গা পেয়ে গেছে। নয়ে নামা উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ব্রাউন ৫৫ বলে ২৪ ও দশে নামা পেসার ইয়ান ব্র্যাডশ ৫১ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
মার্কাস ট্রেসকোথিকের সেঞ্চুরির পরও পথ হারিয়ে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছিল ২১৭ রানে। লন্ডনের কনকনে সেই শীতের সন্ধ্যায় দলটির বোলাররা তবু জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ রামনরেশ সারওয়ান ও ব্রায়ান লারাকে ফেরানোর পর যখন ডোয়াইন ব্রাভোকেও ফেরালেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৮০/৫। এরপর কী হয়েছে, সেটি তো ইতিহাস।
ফাইনাল জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?