পিএসজি ছেড়ে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে যোগ দিয়েছিলেন নেইমার জুনিয়র। মেয়াদ পূর্ণ হবার আগে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি বাতিল করে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। 

তবে ব্রাজিলের এই ক্লাবটির সঙ্গে মাত্র ছয় মাসের চুক্তি করেছেন সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। যার অর্থ আগামী গ্রীষ্মকালীন দলবদলের মৌসুমে ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাবেন তিনি। 

সান্তাসের সঙ্গে অবশ্য এক বছরের ঐচ্ছিক চুক্তির শর্ত আছে। অর্থাৎ সব ঠিকঠাক গেলে, ব্রাজিলের লিগে মন বসলে তিনি আরও এক বছর থেকে যাবেন শৈশবের ক্লাবে। ফর্মে ফিরতে পারলে সান্তোসের নেইমার খেলবেন ব্রাজিলের জার্সিতে ২০২৬ বিশ্বকাপ। 

নেইমার বয়স সবে ৩৩ বছর। তারপরও সান্তোসের সঙ্গে মাত্র ছয় মাসের চুক্তি কেন করেছেন নেইমার। এমন প্রশ্নে ব্রাজিলিয়ান তারকা জানিয়েছেন, তিনি সহজ করে ভাবতে চেয়েছেন। সেজন্যই এই সংক্ষিপ্ত চুক্তি। 

নেইমার বলেন, ‘এই চুক্তি শুধু দুই পক্ষের (নেইমার ও সান্তোস) জন্য নয়। এটা একে অপরকে সহায়তা করার চুক্তি। সান্তোস আমার জন্য আবার আনন্দ নিয়ে ফুটবল খেলার দরজা খুলে দিয়েছে। আর আমি সান্তোসকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতে চেয়েছি। লম্বা চুক্তি করিনি, কারণ জানি না সময় কেমন কাটবে, ফুটবল কতটা উপভোগ করব। এই ছয় মাসে যা কিছু ঘটতে পারে।’

নেইমার জানিয়েছেন, সান্তোসে ছয় মাসের চুক্তি করলেও এটা ছয় মাসের প্রজেক্ট নয়। দুই পক্ষেরই চুক্তি নবায়নের বিষয়টি মাথায় আছে। সান্তোস যাতে নতুন করে আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ফিরতে পারে, ভালো স্পন্সর পায় সেজন্যই তিনি সান্তোসে ফিরেছেন। সান্তোস আবার শীর্ষে ফিরবে বলেও বিশ্বাস নেইমারের।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল দলবদল ছয় ম স র চ ক ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ