বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য আসাদুল্লাহকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
Published: 18th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আসাদুল্লাহ আল গালিবকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সম্প্রতি সংগঠনের সিলেট মহানগরের গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবের সম্মেলনকক্ষে সিলেটের পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। তিনি দুই দিন পরপর তাঁর মনমতো কমিটি দিচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়কের কোনো পদ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে মাহিদ হাসান বলেন, আসাদুল্লাহ গালিব ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি ঘোষণা দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট মহানগরের কমিটির আহ্বায়ক পদ ছাত্রলীগ নেতাকে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও জেলা কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। আসাদুল্লাহ গালিব নিজের রাজত্ব কায়েম করতে এমনটি করছেন। বিগত জুলাই আন্দোলনে বুলেটকে ভয় না পেয়ে যারা সামনের কাতারে ছিল, যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা ভূমিকা রেখেছে সেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। সিলেট জেলা, মহানগরসহ বিভিন্ন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীকে রাখা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনাকে দেশ থেকে বিদায় দিয়েছেন ছাত্র–জনতা। এতে দুই হাজারের অধিক ভাই–বোন শহীদ হয়েছেন, ৩০ হাজারের অধিক ভাই–বোন পঙ্গু হয়েছেন। যে বৈষম্য দূর করতে আন্দোলন করা হয়েছিল, সে বৈষম্য এখনো দূর হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, সিলেট মহানগরের গঠিত কমিটিতে শতাধিক পদ থাকলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র তিনজনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাঁরা এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিগত দিনের কমিটিগুলোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এলেও সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি মহানগরের কমিটিতে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পদধারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামগুলোও অসামঞ্জস্যপূর্ণ দেখা গেছে। এসব বৈষম্যকে কবর দিতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে শিক্ষার্থীরা কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানান এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলন শেষে কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমানসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে আসাদুল্লাহ আল গালিবের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে মঙ্গলবার রাতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে সন্ধ্যায় তিনি তাঁর ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট মহানগরের কমিটি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘কমিটিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অনেক ভুল আসায় পেজ থেকে কমিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কমিটি প্রকাশের পরে অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কারও কোনো স্পেসিফিক অভিযোগ থাকলে বিভাগীয় সফরে যারা কমিটি গঠনের দায়িত্বে ছিল তাদের দিতে বলা হচ্ছে। কমিটি স্থগিত থাকবে। সবকিছু সংশোধন করে পুনরায় কমিটি প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া সম্মিলিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এবং সম্মিলিত মেডিকেল কলেজ, সিলেটের কমিটি গঠনের কাজ চলমান আছে। যারা এই দুইটা ইউনিটে কাজ করতে আগ্রহী তাদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট ব সরক র কম ট ত র কম ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?
আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।
২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।
নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।