প্রথমবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও টিকটক যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় ‘ডিজিটাল সেফটি সামিট’ বাংলাদেশ পর্বের উদ্যোগ নেয়। দায়িত্বশীল ও নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ তৈরি করাই যার মুখ্য উদ্দেশ্য। অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা সম্মেলনে অংশ নেন।

বাংলাদেশে তরুণদের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ সম্মেলন সহায়ক হবে বলে উদ্যোক্তারা জানান। ডিজিটাল সাক্ষরতা, অনলাইন নিরাপত্তা, ভুল তথ্য মোকাবিলা ও সঠিক ডিজিটাল পরিচর্যা নিয়ে কথা বলেন বক্তারা।

টিকটকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট রিলেশন্সের প্রধান ফেরদৌস আল মুত্তাকিন ডিজিটাল সুরক্ষার গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলেন, আমরা গ্রাহকের নিরাপত্তার প্রশ্নে অগ্রাধিকার দিই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, বিশেষজ্ঞ ও নিজস্ব কমিউনিটির সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল গ্রাহকের জন্য এমন নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব, যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর স্বাধীন ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.

)  মো. এমদাদ উল বারী ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ডিজিটাল সব মাধ্যমে দ্রুত বিকশিত হওয়ার সঙ্গে নিজেদের অনলাইন কমিউনিটি, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন জরুরি। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে দায়িত্বশীল ডিজিটাল আচরণ গড়ে তোলা, সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সব বাংলাদেশির জন্য নিরাপদ ডিজিটাল সিস্টেম তৈরিতে আগ্রহী।
সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ ও ডিজিটাল ইনফ্লুয়েন্সারদের অনলাইন নিরাপত্তা, দায়িত্বশীল কনটেন্ট তৈরি ও সাইবার হুমকি সামলে নেওয়ার কৌশল সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন বক্তারা। সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মের সবশেষ নিরাপত্তা বা সেফটি ফিচার, শিক্ষামূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বিটিআরসির সঙ্গে কার্যক্রমের তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ