ফিলিপাইনের সবচেয়ে জনবহুল নগরকেন্দ্রগুলোর একটির কর্তৃপক্ষ মশা ধরা কিংবা মারার জন্য পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মূলত প্রাণঘাতী ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফিলিপাইনের বারাঙ্গে অ্যাডিশনাল হিলসের গ্রামপ্রধান কারলিটো সার্নাল বলেন, কেউ পাঁচটি মশা জমা দিতে পারলেই এক পেসো (স্থানীয় মুদ্রা) পুরস্কার পাবেন। সেখানে ডেঙ্গুতে দুজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কারলিটো সার্নাল বলেন, জীবিত কিংবা মৃত মশা জমা দিলে মিলবে পুরস্কারের অর্থ। মশার লার্ভা জমা দিলেও পুরস্কার দেওয়া হবে। পরে অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার করে জীবিত মশা নির্মূল করা হবে।

রাস্তা পরিষ্কার রাখা ও ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক পানি জমে থাকার জায়গা নষ্ট করার মতো বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিপূরক হিসেবে জীবিত বা মৃত মশার বিনিময়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান এই গ্রামপ্রধান।

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য বিভাগ (ডিওএইচ) বিবিসিকে জানিয়েছে, ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়তে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাহীদের সদিচ্ছা প্রশংসাযোগ্য। জানতে চাওয়া হয়, নগর অর্থের বিনিময়ে মশা ধরা কিংবা মারা ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কার্যকর কৌশল কি না, সেই প্রশ্নের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ পুরস্কার ঘোষণায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কমেন্টে একজন লিখেছেন, ‘এখন মশার খামার করা হবে।’ আরেকজন প্রশ্ন রেখেছেন, ‘শুধু একটি ডানা থাকলে কি মশা ফেরত দেওয়া হবে?’

গ্রামপ্রধান কারলিটো সার্নাল বলেন, মশা ধরা বা মারার বিনিময়ে নগদ অর্থ দেওয়ার বিষয় নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে বেশ শোরগোলের কথা তিনি জানেন। তবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এটা প্রয়োজনীয়।

সার্নাল আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকায় ৪৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত করেছে। এটা অন্যতম বড় ও জনবহুল একটি এলাকা। কাজেই স্থানীয় সরকারকে সহায়তায় আমাদেরও কিছু করা আছে।’

ফিলিপাইনজুড়ে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। দেশটির ডিওএইচ বলছে, এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফিলিপাইনে ২৮ হাজার ২৩৪ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল প ইন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ