‘আমাদের চিনিস, আমরা কে’ বলে রামদা দিয়ে আঘাত করেন আলফাজ ও সাইফ
Published: 19th, February 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরার সড়কে প্রকাশ্যে এক দম্পতির ওপর ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে হামলার সময় হামলাকারীরা বলতে থাকেন, ‘আমাদের চিনিস? আমরা কে?’ তাঁরা একের পর এক আঘাত করেন ওই নারী ও পুরুষের ওপর। এ ঘটনায় নতুন করে আরও দুজনসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া হামলায় ব্যবহৃত দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও ঘটনার ভুক্তভোগীরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কে ওই দম্পতিকে প্রকাশ্যে কোপানো হয়। ওই ঘটনা নিয়ে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান। ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
এ ঘটনায় নতুন করে গ্রেপ্তার দুজন হলেন মেহেদী হাসান সাইফ (২৪) ও সজীব (২০)। এর আগে গ্রেপ্তার করা হয় মো.
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মেহেবুল হাসান (৩৭) ও নাসরিন আক্তার (ইপ্তি) (২৮) দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রটিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফ ও সজীবকে গতকাল রাতে টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে যে দুজন কুপিয়েছেন তাঁরা হলেন আলফাজ ও সাইফ। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে রবির বিরুদ্ধে আগে থেকেই মামলা ছিল।
আরও পড়ুনউত্তরায় রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানো: দুই আসামি রিমান্ডে১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মামলায় উঠে এল হামলার বিবরণ
হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় তিনি ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেছেন।
মামলার এজাহারের সূত্র ধরে ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার রাত আনুমানিক ৯টায় মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার দম্পতি উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর সড়কের বাসার সামনে পৌঁছালে সেখানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে এলোমেলোভাবে চালিয়ে বিকট শব্দ করে যেতে থাকেন। তখন একটি মোটরসাইকেল সামনে থাকা একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। সে সময় রিকশায় চার বছরের একটি শিশু তার মায়ের সঙ্গে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে ওই মোটরসাইকেলের মোবারক হোসেনের সঙ্গে বাক্বিতণ্ডা শুরু করেন। এ সময় রিকশার পেছনে থাকা মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করেন। তখন রিকশার যাত্রীরা চলে যান।
আরও পড়ুনউত্তরায় দম্পতির ওপর রামদা দিয়ে প্রকাশ্যে হামলা, ভিডিও ভাইরাল১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহেবুল হাসানের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন এবং একপর্যায়ে তাঁকে মারপিট শুরু করেন। এ সময় তারা বলতে থাকে, ‘আমাদের চিনিস? আমরা কে?’। সে সময় ভুক্তভোগী দম্পতি আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলেন এবং তাঁর মোটরসাইকেল আটক করেন। তখন তিনি (হামলাকারী) ফোন করে তার আরও কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত জনসাধারণের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করেন। রামদা দিয়ে মেহেবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এ সময় নাসরিন আক্তার তাঁর স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাঁকেও রামদা দিয়ে আঘাত করেন। এতে ওই দম্পতির শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ আহত দম্পতিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে তাঁরা সেখানে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুনভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘দাও দিয়ে কোপাইতেছে, এটা কোনো কথা!’১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ঘটন য় এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।