এসিআই নিয়ে এল নতুন স্কিনকেয়ার এক্সপার্ট ব্র্যান্ড ‘অ্যাঞ্জেলিনা’
Published: 20th, February 2025 GMT
ত্বকের যত্নে নারীদের সচেতনতা ও বিভিন্ন ধরনের পণ্য ব্যবহার করার প্রবণতায় গত কয়েক বছরে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি উপাদাননির্ভর পণ্যের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা আধুনিক স্কিনকেয়ার পদ্ধতির বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর পাশে জায়গা করে নিতে এসিআই নিয়ে এল নতুন প্রজন্মের ফর্মুলেশনে তৈরি প্রথম ব্র্যান্ড ‘অ্যাঞ্জেলিনা’। অ্যাঞ্জেলিনা রেঞ্জের প্রথম পণ্য অ্যাঞ্জেলিনা হায়ালুরনিক বুস্টার দেশব্যাপী পাওয়া যাচ্ছে।
সম্প্রতি বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে অ্যাঞ্জেলিনার পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এই আয়োজনে ‘ব্র্যান্ড ফেস’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাজিফা তুষিকে।
এসিআই লিমিটেডের বিজনেস ডিরেক্টর খন্দকার ইশতিয়াক আহমদ, জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মিজানুর রহমান, জেনারেল ম্যানেজার (ফ্যাক্টরি অপারেশনস) দীপঙ্কর বিশ্বাস, জেনারেল ম্যানেজার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মো.
ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য নারী উদ্বিগ্ন থাকেন, কেউ কেউ হীনম্মন্যতায় ভোগেন। ত্বকের সমস্যা সমাধানে কখনো ঘরোয়া পদ্ধতি, কখনো বা দামি বিদেশি পণ্য ব্যবহার করে থাকেন এবং এদের মধ্যে অধিকাংশ পণ্যের উৎপাদনপ্রক্রিয়া ও গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এসব পণ্য ব্যবহারে দিনের পর দিন বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা আর পরিশ্রমের দৃশ্যমান পরিবর্তন থাকে খুবই সামান্য, যা নিয়ে হতাশায় ভোগেন লাখো নারী। এসব নারীর প্রধান অভিযোগ ছিল শুষ্কতা, নিষ্প্রভতা এবং বয়সের আগেই বলিরেখা নিয়ে দুর্ভোগ।
এসব সমস্যার সমাধানে নারীদের ত্বকের পরিচর্যাকে আরও কার্যকর করতে এল অ্যাঞ্জেলিনা হায়ালুরনিক বুস্টার। এর হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন ও গোলাপের নির্যাসসমৃদ্ধ নতুন প্রজন্মের ফর্মুলেশন শুষ্কতা দূর করে ত্বকে আনবে সতেজ সৌন্দর্যের আভা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য
কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।
মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।
দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।
লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।
দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।
জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।
রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।
দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।