যশোরের স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট ও জাতীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পরিবহন প্রশাসক ড. মো. শিমুল ইসলাম। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় যশোর প্রেস ক্লাবে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। 

পরিবহন প্রশাসক ড.

মো. শিমুল ইসলাম বলেন, “গত ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় ‘যবিপ্রবির পরিবহন শাখায় জ্বালানি তেল চোর সিন্ডিকেট সক্রিয়, মূল হোতারা ধরাছোয়ার বাইরে’ শিরোনামে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে হেয় করার জন্য এ নিউজ করা হয়েছে। এ ধরনের সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।”

তিনি বলেন, “পরিবহন দপ্তরে এসে সিন্ডিকেট গঠন করে জ্বালানী থেকে ৫-৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি—এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। যবিপ্রবিতে ৩০টি গাড়ি সচল রয়েছে এবং প্রতি মাসে ১২/১৫ লাখ টাকার জ্বালানী তেল লাগে। কিন্তু বর্তমানে যবিপ্রবির পরিবহন পুলে মোট ২৬টি গাড়ি সচল রয়েছে এবং প্রতি মাসে তেলের খরচ হচ্ছে ৮-১০ লাখ টাকা। তাহলে, এসব তথ্য কতটা যুক্তিযুক্ত ও বাস্তবসম্মত?” 

তিনি আরো বলেন, “প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছরে পরিবহন শাখা থেকে ৬০ লাখ টাকার বেশি জ্বালানী তেল চুরি হয়। এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিবহন দপ্তরের সদ্য বদলি হওয়া কর্মকর্তা রেজা ও সংশ্লিষ্টদের অনুসন্ধানের আওতায় আনা হলে আপনারা সঠিক তথ্য খুঁজে পাবেন। বিগত সরকার ও পূর্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সময় জ্বালানী তেল বিক্রির কোন সিন্ডিকেট ছিল কি না, সে বিষয়ে আমার কাছে সুস্পষ্ট কোন তথ্য বা অভিযোগ নেই। এ বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদান ও সহযোগিতা করার জন্য আমি সাংবাদিকসহ সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও প্রতিবেদনে সহকারী রেজিস্ট্রার এস এম হাসান আলীকে আমার বাল্যবন্ধু বলা হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কোন ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।”

যানবাহন কর্মকর্তা হাসান আশকারীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে ড. শিমুল বলেন, “হাসান আশকারী পরিবহন প্রশাসকের ধারাবাহিক নির্যাতনে এবং মানসিক টর্চারে সম্প্রতি চাকরি থেকে রিজাইন দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো- যানবাহন কর্মকর্তা মো. আবু হাসান আল আশকারী সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার জন্য চাকরি ছেড়েছেন। আপনারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই এর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারবেন।”

অসত্য ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ ও অপপ্রচার করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ড. শিমুল আরো বলেন, “পরিবহন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কিছু অনিয়ম চোখে পড়লে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক করার পরেও তারা পরিবর্তন না হওয়ায় তাদের বদলি করা হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং যেসব গোষ্ঠী বা ব্যক্তি এসব তথ্য সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছিয়েছে, তারাই দুর্নীতিবাজ ও অপরাধী। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত পরিবহন দপ্তর পরিচালনার জন্য যথাযথ চেষ্টা চালাচ্ছে।”

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ, ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন

আগামী বছরে হজে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি হজযাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মে হজযাত্রীদের তথ্য আপলোড এবং গ্রুপ গঠন শুরু করতে হবে।

এই সময়সীমা বে‌ধে দি‌য়ে গত ৮ জুন ২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার।

রোডম‌্যা‌পের নি‌র্দেশনা অনুযায়ী সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ৯ ন‌ভেম্বর হজচুক্তি সম্পন্ন হ‌বে। আগামী ১০ জুলাই হজের কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার। তাছাড়া বা‌ড়ি ভাড়া, প‌রিবহনসহ অন‌্যান‌্য প্রক্রিয়া শেষ করার পর হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে ২০২৬ সা‌লের ৮ ফেব্রুয়ারি। ভিসা দেওয়ার কার্যক্রম চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত এবং হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৮ এপ্রিল।

আরো পড়ুন:

ইউরোপীয় গুপ্তচর যেভাবে মক্কায় ঢুকেছিলেন

প্রথম ফিরতি ফ্লাইটে দেশে ফিরলেন ৩৬৯ হাজি

এদিকে, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সৌ‌দি সরকা‌রের হ‌জের রোডম‌্যা‌প অবহিত ক‌রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার (১৫ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে চি‌ঠি পাঠানো হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চি‌ঠি‌তে আরও বলা হ‌য়ে‌ছে, মেডিকেল ফিটনেস ছাড়া কোনো হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন না। বিশেষ করে হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার সিরোসিস, কিডনি রোগে আক্রান্ত, নিউরোলজিক্যাল, মানসিক রোগ, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা, সংক্রামক যক্ষ্মা এবং কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি গ্রহণকারী ক্যানসার আক্রান্ত রোগী হজের নিবন্ধন করতে পারবেন না।

সৌ‌দি স‌রকা‌রের রোডম্যাপ অনুযায়ী, নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্যাম্পের তথ্য অবলোকন এবং অর্থ স্থানান্তরের সুবিধা চালু হবে ২৬ জুলাই। ৯ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চলতি হজের ক্যাম্পগুলো আগামী হজ মৌসুমে গ্রহণের সুযোগ থাকবে। নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে (ক্যাম্পের ভাড়া ও মাশায়ের প্যাকেজ) চুক্তি করা যাবে।
২৪ আগস্টের মধ্যে নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেবা প্যাকেজ, আবাসন এবং পরিবহনের চুক্তি শুরু এবং হজযাত্রী পরিবহনের এয়ারলাইন্স নিয়োগ ও ফ্লাইট সময়সূচি প্রস্তুত করতে হবে। ৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও সৌদি সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি স্বাক্ষর হবে।

‘হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে’ সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সেবা চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে সেবা প্যাকেজের (তাঁবু ভাড়া মাশায়ের প্যাকেজ) প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে হবে।

আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সেবা গ্রহণের (তাঁবু ভাড়া+মাশায়ের প্যাকেজ) চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। একইসঙ্গে এয়ারলাইন্স ও ফ্লাইট সিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। আগামী বছর ২০ জানুয়ারি মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের বাড়ি/হোটেল এবং পরিবহন চুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ স্থানান্তর শুরু হবে।

নুসুক মাসার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বাড়ি/হোটেল ভাড়া এবং পরিবহনের চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত।

রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী বছরের ১৮ এপ্রিল হজের উদ্দেশ্যে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হবে। ২০২৬ সালের হজে হজযাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ দুইটি সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা যাবে। নুসুক মাসার প্লাটফর্মে আগামী ১০ জুলাই হজ কোটা ঘোষণা করা হবে।

আগামী বছরের হজে সব ধরনের চুক্তি এবং সেবা সংক্রান্ত পেমেন্ট নুসুক মাসার প্লাটফর্মে সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে কোনো পেমেন্ট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। সব হজযাত্রীর কোরবানির অর্থ নুসুক মাসার প্লাটফর্মে আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। হজযাত্রীদের খাবারের জন্য সৌদি ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। এছাড়া হজযাত্রী ব্যবস্থাপনার কাজে হজে গমনকারীদের তাঁবু, সার্ভিস প্যাকেজ এবং পরিবহন সেবামূল্য দেওয়া বাধ্যতামূলক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ