বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাতসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে জনতা ব্যাংক থেকে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে ঋণের নামে ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকার (সুদ-আসলে) অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুদক এই চার্জশিট অনুমোদন করে বলে দুদকের মহাপরিচালক মো.

আক্তার হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি বোর্ড গঠনে নীতিমালা অনুমোদন

ইসলামী ব্যাংক: অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও পাচার অর্থ ফেরত চায় ব্যবসায়ী ফোরাম

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিদের মধ্যে অ্যাননটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইউনুছ বাদল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান, সাবেক নির্বাহী পরিচালক নওশাদ আলী চৌধুরী, জনতা ব্যাংকের সাবেক পরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ রয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অ্যাননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে শর্ত শিথিল করে ঋণ দেওয়া হয়। তদন্তে দেখা গেছে, ওই ঋণের নামে ৫৩১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা সুদ-আসলে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের মর্টগেজ করা জমিতে বাস্তবে কোনো ভবন বা কারখানা না থাকা সত্ত্বেও তিন কোটি চার লাখ ৯৬ হাজার টাকায় ক্রয়কৃত জমিকে স্থাপনাবিশিষ্ট হিসেবে মূল্যায়ন করেন। পরে ওই জমি ও স্থাপনার মূল্য ৬ হাজার ৯৮ মিলিয়ন টাকা নির্ধারণ করে অন্যায়ভাবে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করা হয়। এতে বিআরপিডি সার্কুলার ও ব্যাংকিং নীতিমালা লঙ্ঘন করে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকার ক্ষতি হয়।

তাদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ সালের ৫(২) ধারায় মামলা করে দুদক। মামলার আট মাস পর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে সংস্থাটি।

এর আগে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ২৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুদক। আট মাসের তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেওয়া হলো।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ মাস পর ভারতে ফিরে গেলেন সোনালি

বিএসএফের পুশইনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালি দীর্ঘ ৫ মাস ৮ দিন পর নিজ দেশে ফিরে গেছেন। 

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশন দিয়ে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

‘দৃশ্যম থ্রি’ নিয়ে নতুন খবর পাওয়া গেল

১ লাখ কোটি টাকার পারিবারিক ব্যবসাও সামলান এই তারকা-পত্নী

এ সময় তার সঙ্গে ফিরেছেন ৮ বছর বয়সী ছেলে সাব্বির শেখ। সীমান্তের শূন্যরেখায় সোনালিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের সময় আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। 

গত ২৬ জুন সোনালিসহ ৬ জন ভারতীয়কে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছয় ভারতীয় কুড়িগ্রাম থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগরে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ২০ আগস্ট পুলিশ তাদেরকে আটক করে। পরে তাদেরকে ফেরত নিতে রাজি হয়নি বিএসএফ। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এনামুল হক বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দুজন শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। 

ওই ছয়জন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাকুরের বাসিন্দা। তারা হলেন— দানিশ শেখ (২৮), তার স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), সুইটি বিবি (৩৩), মো. কুরবান দেওয়ান (১৬), সোনালি বিবির সন্তান সাব্বির শেখ (৮) ও সুইটি বিবির সন্তান মো. ইমাম দেওয়ান (৬)।

আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর শুনানি শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলাম ৪ ভারতীয়র জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর ওই রাতেই তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে আত্মীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নয়াগোলা এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেনের বাড়িতে উঠেছিলেন। তবে, দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ আবারও তাদেরকে হেফাজতে নেয়। ২ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে তাদেরকে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই নয়াগোলায় তারা অবস্থান করছিলেন।

এ বিষয়ে ৫৯ বিজিবির সহকারী পরিচালক বেলার বলেছেন, মানবিক কারণে অন্তঃসত্ত্বা সোনালি ও তার ৮ বছরের ছেলে সাব্বির শেখের কাগজপত্র যাচাই শেষে শুক্রবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চারজনের কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে তাদেরকেও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ঢাকা/শিয়াম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঁচ মাস পর ভারতে ফিরে গেলেন সোনালি