পাবনার সাঁথিয়ায় আশরাফুল ইসলাম (৩২) নামে এক যুবকের দুই হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার উপজেলার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী যুবক চুরি, ডাকাতি, মারামারিসহ ৯টি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি।

আশরাফুল পৌরসভার কলেজপাড়া মহল্লার নুর ইসলামের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাঁর এক হাতের কবজি উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখার সময় আরেকটির খোঁজে ঘটনাস্থলে ছিল পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ৮-১০ জন দৃর্বৃত্ত আশরাফুলকে পৌর এলাকার ডিজিটাল (টেলিফোন) এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ের দেয়াল দিয়ে ঘেরা অংশে ধরে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ সময় তাঁর চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন আশরাফুলকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বিকেল ৪টার দিকে স্বজন তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

আব্দুল বাতেন বলেন, আশরাফুল নামে এক যুবক দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁর জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।
ঘটনার পর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ের পাশ থেকে আশরাফুলের বিচ্ছিন্ন একটি কবজি পেয়েছে পুলিশ।

সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনি একজন পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন য বক দ ই হ ত র কবজ আশর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ