ঠাকুরগাঁওয়ের চাঞ্চল্যকর মিলি চক্রবর্তী (৪৫) হত্যা মামলা নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত শেষে তার স্বামী, ছেলেসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল আমলি আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো.

জামাল উদ্দিন।

আসামিরা হলেন- ভুক্তভোগীর স্বামী সমির কুমার রায়, ছেলে রাহুল রায়, সমিরের ভাইয়ের ছেলে স্বপন কুমার রায় ওরফে মানিক ও জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সোহাগ।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা বিএনপির নেতা আমিনুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মিলি চক্রবর্তী। মোবাইলে খুদে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে মিলিত হতেন তারা। একপর্যায়ে ছেলে রাহুল রায় ও স্বামী সমির বিষয়টি জেনে যান। ঘটনার দিন মিলির সঙ্গে তাদের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে ছেলে ও স্বামীর মারধরে জ্ঞান হারান তিনি। পরে একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসবাসরত ভাতিজা মানিককে ডেকে পাঠান সমির। নিরাপত্তারক্ষীকে মিলিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ির পাশের গলিতে নিয়ে যান রাহুল-সমির। সেখানে মিলির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৃহবধূ মিলির মৃত্যু একটি হত্যাকাণ্ড। তার বুক ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকলেও মৃত্যু হয়েছে আগুনে পুড়ে।

এ বিষয়ে সিআইডির সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বলেন, ‘‘হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে সেই সময় আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল আসামিরা। তাই বার বার পুলিশের অনুরোধ সত্ত্বেও তারা মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।’’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘মামলার তদন্তভার সিআইডি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের হাতে গেলে তিনি ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। তবে, তৎকালীন এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের চাপে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে মামলার দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়।’’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও শহরের মোহাম্মদ আলী সড়ক থেকে মিলি চক্রবর্তীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দুই দিন পর পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ২০২১ সালের ৫ আগস্ট মামলাটি উন্নত তদন্তের স্বার্থে সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঢাক/হিমেল/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত স আইড

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। 

সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।

একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু