পিটিয়ে সাগরে ফেলে দেওয়া জেলের লাশ উদ্ধার
Published: 21st, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকায় সন্দ্বীপ চ্যানেলে অবৈধভাবে বালু তুলতে বাধা দেওয়ার জেরে পিটিয়ে সাগরের পানিতে ফেলে দেওয়া জেলে রাম জলদাসের (৩২) লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ঘটনার চার দিন পর আজ শুক্রবার সকালে তাঁর লাশ সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত এলাকায় ভেসে আসে।
রাম জলদাসের বাড়ি উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ গ্রামের জেলেপাড়ায়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
কুমিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক ওয়ালীউদ্দিন আকবর প্রথম আলোকে বলেন, জোয়ারের পানিতে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে রাম জলদাসের লাশ ভেসে আসে। ভাটার সময় পানি নেমে যাওয়ায় কাদামাটিতে লাশটি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় জেলেরা। পরে তাঁরা নিহত ব্যক্তির স্বজনদের খবর দেন। স্বজনদের কাছ থেকে খবর পেয়ে নৌ পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাম জলদাসের লাশ উদ্ধার করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছোট ভাই লিটন জলদাসকে নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যান রাম জলদাস। এ সময় তাঁদের জালের খুব কাছ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বাল্কহেড (বালুবাহী নৌযান) ভর্তি করছিলেন কয়েকজন ব্যক্তি। বাল্কহেডের প্রপেলারে জেলেদের একটি জাল পেঁচিয়ে যায়। জালটি কাটার সময় প্রতিবাদ করেন রাম জলদাস। এ সময়ে বালু তোলায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাম জলদাসের মাথায় আঘাত করেন। পরে পিটিয়ে তাঁকে সাগরের পানিতে ফেলে দেন। এরপর থেকে রাম জলদাস নিখোঁজ ছিলেন।
রাম জলদাসকে সাগরে ফেলে দেওয়ার পর তাঁর ছোট ভাই লিটন জলদাসকেও অপহরণ করে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় নিয়ে যান বালু তোলায় জড়িত ব্যক্তিরা। পরে নৌ পুলিশের সদস্যরা লিটন জলদাসকে উদ্ধার করেন। রাম জলদাসের স্ত্রী কণিকা জলদাস এ ঘটনায় হত্যা ও অপহরণের মামলা করেছেন। নৌ পুলিশ ঘটনায় জড়িত ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।