ইউক্রেনীয়রা জেলেনস্কিকে ঘৃণা করে, বললেন মাস্ক
Published: 21st, February 2025 GMT
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন ইলন মাস্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এ শীর্ষ ধনীর দাবি, ইউক্রেনের জনগণ দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ঘৃণা করেন। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা থেকে জেলেনস্কিকে বাদ রাখার অধিকার আছে ট্রাম্পের।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করতে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে যখন জেলেনস্কিকে আহ্বান করা হচ্ছে, তখনই এমন মন্তব্য করলেন মাস্ক।
ট্রাম্প সরকারে সংস্কার আনার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছেন মাস্ক। স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান মাস্ক তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা করেছেন।
এক্স পোস্টে জেলেনস্কি সম্পর্কে মাস্ক লিখেছেন, তিনি জানেন সব ইউক্রেনীয় গণমাধ্যমকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও ব্যাপক ভোটে হেরে যাবেন। তাই তিনি নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিলেন। বাস্তবে ইউক্রেনের জনগণ তাঁকে ঘৃণা করেন।
জেলেনস্কির জনসমর্থন অনেক কম বলে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে নির্বাচনের জন্য চাপও দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এমন অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছেন শীর্ষ ধনী মাস্ক।
গতকাল বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) মাস্ক শান্ত কণ্ঠে বলেন, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে বাস্তবসম্মত চিন্তাভাবনা করেন।
মাস্ক বলেন, প্রেসিডেন্টের অনেক সহানুভূতি আছে। তিনি সত্যিই এ নিয়ে ভাবেন।
২০১৯ সালে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন জেলেনস্কি। তবে ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করার কারণে পরবর্তী নির্বাচনগুলো স্থগিত করা হয়েছে।
ইলন মাস্ক গতকাল আরও দাবি করেন, এক্সে সম্ভাব্য বিভ্রান্তিকর পোস্টের সত্যতা যাচাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি ফিচারের অপব্যবহার করে জেলেনস্কির পক্ষে প্রচার চালানো হচ্ছে। এ সমস্যাটির সমাধান করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
অনেকেই এক্সে ‘কমিউনিটি নোটস’ ফিচারটি ব্যবহার করেন। এর আওতায় ব্যবহারকারীরা ভুয়া তথ্য বা সংবাদের বিষয়ে অবহিত করতে পারেন।
গতকাল এক্স পোস্টে মাস্ক লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কমিউনিটি নোটস নিয়ে বিভিন্ন সরকার এবং প্রথাগত গণমাধ্যমগুলো খেলছে। এটি ঠিক করার জন্য কাজ করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা পুরোপুরি নিশ্চিত করা দরকার যে জেলেনস্কির প্রতি জনসমর্থনের ব্যাপারে তাঁর নিজের নিয়ন্ত্রিত জরিপটি বিশ্বাসযোগ্য নয়! বাস্তবে ইউক্রেনের জনগণ তাঁকে ঘৃণা করেন। আর এ কারণে তিনি নির্বাচনের আয়োজন করতে রাজি হননি।’
গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আকস্মিক ফোনালাপের পর জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণে ইউক্রেনীয় প্রাকৃতিক সম্পদে প্রবেশাধিকার দেবে, এমন একটি চুক্তিও খারিজ করে দিয়েছেন জেলেনস্কি। গত তিন বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তার জন্য এ প্রতিদান চাইছেন ট্রাম্প।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ইউক র ন য র জন য ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক