রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’র ঘটনায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ৫ জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহাবুবের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন মো. মিরাজ, আল আমিন, মোহাম্মদ হোসেন, মোমিনুল ও মেহেদি হাসান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত বুধবার মধ্যরাতে চাঁদ উদ্যানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’র সময় দুই ব্যক্তি নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুম্মন ও মিরাজ হোসেন। এ সময় অস্ত্র-গুলিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করে।

মামলায় বলা হয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে যৌথ বাহিনী চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় একতলা একটি বাড়ির টিনের চালার ওপর থেকে সন্ত্রাসীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। আত্মরক্ষার্থে যৌথ বাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। পরে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে জুম্মন ও মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। চাঁদ উদ্যানের বাড়ি থেকে একটি পিস্তল, চারটি গুলি, একটি চাপাতিসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যান। এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।

ঢাকা/মামুন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ