সরকার একা পরিবর্তন আনতে পারবে না, প্রত্যেককেই অংশ হতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
Published: 22nd, February 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমরা প্রায়ই অন্যের ওপর দোষ চাপাই, কিন্তু নিজেরা বদলাতে চাই না। সরকার একা পরিবর্তন আনতে পারবে না, আমাদের প্রত্যেককেই পরিবর্তনের অংশ হতে হবে। আমাদের অবস্থান থেকে সচেতন হলেই একটি সুন্দর ও টেকসই বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।
শনিবার রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের সেনাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের প্রথম সমাবর্তনে কনভোকেশন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবেশের সুরক্ষা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। উন্নয়ন এমনভাবে করতে হবে, যাতে প্রকৃতির ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। প্রকৃতিকে পরাজিত করা যায় না, বরং তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবন গড়ে তুলতে হয়। পরিবর্তিত বিশ্বে আমাদের জীবনযাত্রাকে টেকসই করতে হবে।
শব্দদূষণ, পলিথিন দূষণ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাজ করার অনুরোধ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, শুধু নিজেদের ভবিষ্যৎ নয়, দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্বও নিতে হবে। শিক্ষার প্রকৃত মূল্যায়ন হয় তখনই, যখন তা সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজে লাগে। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিলেই সমাজ বদলাবে না, বরং বাস্তব কর্মের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের বাংলাদেশ। তাই নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
সিস্টেমকে কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দায়িত্ব শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবা নয়, সমাজ ও দেশকে নিয়েও ভাবতে হবে। সেবা প্রাপ্তি সহজ করতে হবে, যেন সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। এখন সময় এসেছে দেশের জন্য কাজ করার, সমাজের জন্য অবদান রাখার। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সমৃদ্ধ ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
সমাবর্তনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী প্রফেসর ড.
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সনদ বিতরণের পাশাপাশি গোল্ড মেডালিস্টদের সনদ ও পদক প্রদান করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব শ উপদ ষ ট উপদ ষ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’