বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে আজ ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ফ্ল্যাগশিপ আয়োজন ডিজিটাল সামিটের ১১তম সংস্করণ। আয়োজনটির পরিবেশনায় ছিল মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ‘ডিজিটাল রেনেসাঁ: ইনোভেটিং ফর টুমরো’স কনজিউমার’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে এই বছরের সামিটে দুটি কিনোট সেশন, চারটি প্যানেল আলোচনা ও দুটি ইনসাইট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনগুলোতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ এবং ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের গ্রুপ সিইও ও নির্বাহী সম্পাদক সাজিদ মাহবুব বলেন, ‘ডিজিটাল পরিবর্তন এখন আর শুধু একটা বিকল্প নয়, বরং অত্যাবশ্যকীয়। আমরা এমন এক সময় আছি, যেখানে ডিজিটাল রূপান্তর, ব্যবসা ও ব্র্যান্ডের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ধরন বদলে দিচ্ছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের উদ্ভাবনী হতে হবে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ও ভোক্তাদের চাহিদা বুঝতে হবে। এই সম্মেলনের লক্ষ্যই হলো বিশেষজ্ঞ বক্তা এবং সমবেত অতিথিদের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোকে তুলে ধরা, যা আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে, ভোক্তাদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযোগ তৈরি করতে এবং ডিজিটাল জগতে সফলভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’

১১তম ডিজিটাল সামিটে দুটি কিনোট সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) প্রেসিডেন্ট জাভেদ আখতার এবং বিল্ডকন কনসালটেন্সিস লিমিটেড লিডারশিপ কনসালট্যান্টের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা অংশীদার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

জাভেদ আখতার কি-নোট সেশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটাভিত্তিক কৌশলের পরিবর্তনশীল ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। তিনি জানান, ব্যবসার নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ খুবই ফলপ্রসূ, যা ইউনিলিভার তাদের কার্যক্রমে গভীরভাবে সংযুক্ত করেছে।

প্যানেল আলোচনাগুলোতে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। হাইপার পার্সোনালাইজেশন ও অভিজ্ঞতানির্ভর অর্থনীতির মতো প্রাসঙ্গিক বিষয়ের পাশাপাশি ডেটাভিত্তিক ক্রিয়েটিভিটির চর্চায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈপ্লবিক ভূমিকার মতো বিষয়গুলো আলোচিত হয়। প্যানেল আলোচনা ও ইনসাইট সেশনে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের করপোরেট খাতের বিশেষজ্ঞরা।

আয়োজনটির অফিশিয়াল ক্যারিয়ার অংশীদার টারকিশ এয়ারওয়েজ, হসপিটালিটি অংশীদার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা, নলেজ অংশীদার মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ, টেকনোলজি অংশীদার আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড ও পিআর অংশীদার হিসেবে ছিল ব্যাকপেজ পিআর।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ত ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ