এলএনজি চুক্তির বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ
Published: 22nd, February 2025 GMT
চট্টগ্রামে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ুর ক্ষতিকারক আর্জেন্ট এলএলসি-এর সঙ্গে করা সাম্প্রতিক তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন এবং বিডব্লিউজিইডি-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে টেকসই শক্তিতে রূপান্তরের আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এমনিতেই বৈদেশিক ও এলএনজি-নির্ভর জ্বালানি ব্যবস্থার কারণে বিদ্যুতসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাবে এবং যার চুড়ান্ত পরিণতি জনজীবনে অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়বে। বক্তারা বাংলাদেশে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ অগ্রাধিকার দেবার জোর দাবি জানান।
আরো পড়ুন:
সাভারে ২টি সড়ক অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ
সড়কে আলু ফেলে কৃষকের বিক্ষোভ
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘‘আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা থেকে মুক্ত হতে হবে। এই এলএনজি চুক্তি শুধু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থরক্ষা করবে, অথচ সাধারণ জনগণকে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বইতে হবে।’’
বিক্ষোভ শেষে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রদানের দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব চকবাজার থানা সভাপতি আবদুল আলীম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সুফিয়া কামাল ফেলো ও নারী নেত্রী সায়মা হক, বিশিত নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক জান্নতুল ফেরদৌস প্রমুখ।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।
এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল
নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল
সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।
সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।
সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ